‘স্বামীর পরকীয়ার কারণেই আত্মহত্যা করেন ইভানা’

|

স্বামী আবদুল্লাহ মাহমুদ হাসানের সঙ্গে ইভানা লায়লা চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

মনিরুল ইসলাম:

বিয়ের এক দশক পর জানা গেলো, কতোটা অসুখী ছিলেন রাজধানীর স্কলাস্টিকা স্কুলের কর্মকর্তা ইভানা লায়লা চৌধুরী। তাও আবার তার মৃত্যুর পর।

ইভানার পরিবার ও বন্ধু-সহকর্মীদের অভিযোগ, স্বামী ব্যারিস্টার রুম্মানের পরকীয়ার সম্পর্ক সহ্য করতে না পেরেই আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন ইভানা। তবে এ নিয়ে মামলা করেনি পরিবার।

আনন্দেই ছিলেন ইভানা লায়লা চৌধুরী। ছিলেন রাজধানীর স্কলাস্টিকা স্কুলের ক্যারিয়ার গাইডেন্স কাউন্সিলর। দুই ছেলেকে নিয়ে সারাদিন মেতে থাকতেন দুষ্টুমিতে। কিন্তু এসব এখন শুধুই স্মৃতি। গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পরীবাগের নকশী প্যালেসের দুটি ভবনের মাঝে পাওয়া যায় তার লাশ। তাই মা-বাবার চোখের পানি আর ধরে না! মেয়ের শোকে কেঁদেই চলেছেন তারা।

ইভানার বোন ফারহানা চৌধুরী বলেন, তার স্বামীর কেনো আরেকটা মেয়ে পছন্দ হলো সেই কথাটাই বার বার সে বলেছে যে জিনিসটা সে নিতে পারছে না। জানাজা হলো আমার বোনের কবর দেয়ে হলো গত বুধবারের কথা আজ পর্যন্ত কোনো খবর নেই।

ইভানার বাবা আমান উল্লাহ চৌধুরী বলেন, ওর বন্ধু-বান্ধবদের সাথে এগুলো শেয়ার করতো সে। এগুলো দেখে এখন হচ্ছে সে অনেক অসুখী ছিল কিন্তু সে আমাদের বলে এসেছে তারা অনেক সুখী আছে।

ইভানার মৃত্যুর পর জানা গেলো, তার দাম্পত্যজীবনের অজানা অধ্যায়। পরিবার ও বন্ধু-সহকর্মীরা জানান, স্বামীর পরকীয়া নিয়ে ছিলেন ভীষণ কষ্টে। যার প্রমাণ মেলে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। বিভিন্ন সময় তার কথোপকথন থেকে জানা যায়, একজন নারী আইনজীবীর সাথে গভীর সম্পর্কে জড়িয়েছেন স্বামী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ হাসান মাহমুদ ওরফে রুম্মান। কিন্তু বাবা-মায়ের সম্মানের কথা ভেবে বিরত ছিলেন তালাক থেকে। তবে বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে যোগাযোগ করেছিলেন একজন আইনজীবী শিক্ষকের সাথে।

ইভানার শিক্ষক ব্যারিস্টার আসিফ বিন আনওয়ার বলেন, স্ক্রিনসর্ট দেখে বুঝা যাবে ইভানাকে সরিয়ে কীভাবে অপর নারীকে তার স্থানে প্রতিস্থাপিত করা যায়। ইভানা তার টেক্সটে এটাও লিখেছে যে তাকে নিয়মিত ঘুমের ওষুধ দেয়া হতো।

এ বিষয় নিয়ে ব্যারিস্টার রুম্মানের বাসায় গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। রিসিভ করেননি মোবাইল ফোনের কলও। তার বাবা জানান, ছেলের বিষয়ে তাদের কিছুই জানানো হয়নি।

রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, তার পরিবার থেকে এখন পর্যন্ত যে মামলা হয়েছে সেটা ইউডি মামলা। তার পরিবারের পক্ষ থেকে যদি এ বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ আসে তাহলে আমরা তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার সব তথ্য-প্রমাণ, অভিযোগ নিয়ে শাহবাগ থানার কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করেন ইভানা চৌধুরীর সহকর্মী, বন্ধু ও আইনজীবী শিক্ষকরা।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply