সেই মুক্তমঞ্চে গিয়ে দাঁড়ালেন অধ্যাপক জাফর ইকবাল

|

গত সপ্তাহে হামলার শিকার হয়েছিলেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে এক অনুষ্ঠান চলাকালে। সুস্থ হওয়ার পর আজ বুধবার ঢাকা থেকে নিজের ক্যাম্পাসে গিয়ে সেই মুক্তমঞ্চেই প্রথমে দাঁড়ালেন জনপ্রিয় এই লেখক।

সেখানে অধ্যাপক জাফর ইকবাল তার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘তোমরা দেখিয়েছ ম্যাচিউরড ছেলেমেয়ে হলে কী করতে হয়। এখানেই বসেছিলাম আমরা, যখন আমাকে আঘাত করা হয়েছিল। তার জন্য আমার বিন্দুমাত্র রাগ নাই। মায়া আছে, করুণা আছে। কেন এটা করেছে? বেহেশতে যাবে বলে। এটা তার মাথায় ঢুকানো হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে কথা বলতে আসো। অস্ত্রটা বাসায় রেখে আসো। আমি শুনতে চাই, কেন তোমার এত কষ্ট।’

জাফর ইকবাল আরও বলেন, ‘একজন মানুষ কত দুঃখী হতে পারে যার মনে হয়, একজনকে মেরে বেহেশতে যাবে। পৃথিবীতে তাকিয়ে দেখো। কী সুন্দর। এ সুন্দর পৃথিবীর কিছুই সে দেখে না, জানে না। কেবল জানে একজনকে মারলে বেহেশতে যাবো।’

তিনি বলেন, ‘এখানেও একজন হয়তো আছে। যে ভাবছে, পারলাম না আরেকবার অ্যাটেম নিতে হবে। তার উদ্দেশে বলছি, আমার সঙ্গে কথা বলতে আসো। অস্ত্রটা বাসায় রেখে আসো। আমি শুনতে চাই, কেন তোমার এত কষ্ট।’

জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমাকে নাস্তিক বলো? আমি কোরান শরিফ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিখুতঁভাবে পড়েছি। সেখানে একটি আয়াত আছে, তুমি যদি একজনকে মারো, তুমি সারা মানবজাতিকে হত্যা করছো। কেমন করে তারা এত বড় দায়িত্ব ঘাড়ে নেয়। কে তোমাদের এসব বুঝিয়েছে। যারা বুঝিয়েছে তারা নিশ্চিন্তে আছে। আর তুমি, যে কিনা রিমাণ্ডে আছো, তোমার মা, ভাই, বাবা রিমাণ্ডে। যারা এসব কথা বলো, তারা আসো আমার সঙ্গে কথা বলো।’

এর আগে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে জাফর ইকবালকে বহনকারী নভোএয়ারের একটি বিমান সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তাকে বরণ করে নিতে শাবিপ্রবির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিমানবন্দরে সকাল থেকেই অপেক্ষা করছিলেন।

গত ৩ মার্চ ছুরিকাহত হওয়ার পর ওই দিন রাতেই ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে আসা হয় ড. জাফর ইকবালকে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply