নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে করোনার টিকা নেয়ার আধা ঘণ্টা পর হোসনা আক্তার নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের বাহেরচর কমিউনিটি ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। হোসনা আক্তার (২৯) উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মাসুম মিয়ার স্ত্রী।
জানা যায়, শনিবার (৬ নভেম্বর) উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকে ৫০০ জনকে করোনা টিকা দেয়ার জন্য নির্ধারিত ছিল। দুপুর ১২টায় হোসনা করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিতে ওই কমিউনিটি ক্লিনিকে যান। সে সময় ক্লিনিকের দায়িত্বরত হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মতিউর রহমান তাকে টিকা দেন। কিছুক্ষণ পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মাসুম মিয়ার সাথে পাঁচ বছর আগে হোসনার বিয়ে হয়। তিনি নিঃসন্তান ছিলেন।
নিহতের মা শামসুন্নাহার বেগম বলেন, আমার মেয়ে টিকা দেয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেন।
কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মতিউর রহমান বলেন, দুপুর ১২টার দিকে অন্যান্যদের সাথে হোসনা আক্তারও টিকা নিতে কেন্দ্রে আসেন। টিকা দেয়ার কিছুক্ষণ পর শুনতে পাই স্থানীয় পুকুরপাড়ে গিয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার মাথায় অনেকে পানি দেয়। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রঞ্জন বর্মণ বলেন, একটি ভায়াল থেকে পাঁচজনকে টিকা দেয়া হয়। একই ভায়াল থেকে তার (হোসনা) বোনসহ পাঁচজন টিকা নিয়েছেন। বাকিরা সুস্থ আছেন। তাদের কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি।
পরিবার থেকে জানা গেছে, হোসনার অ্যালার্জিজনিত সমস্যা ছিল। তিনি নিম্ন রক্তচাপের রোগী ছিলেন। তার ওপর তিনি সকালে কিছু না খেয়েই দুপুরে টিকা নিতে যান।
রঞ্জন বর্মণ আরও বলেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেকেই বিভিন্ন অনলাইনের দোকান থেকে টিকার জন্য নিবন্ধন করেন। নিবন্ধন করার সময় বিভিন্ন রোগের তথ্য পূরণ করতে হয়। অনেকেই বিষয়টি না বুঝে পূরণ করেন। এটা সঠিক নয়। অনলাইনে নিবন্ধন ফরম পূরণের সময় তিনি (হোসনা) হয়তো নিজের শারীরিক সমস্যা সম্পর্কিত তথ্যগুলোর ঘরে টিকচিহ্ন দেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে টিকার ১-২ শতাংশ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে।
Leave a reply