তুরস্কের আচরণ জলদস্যুর মতো: শরণার্থী ইস্যুতে তীব্র ক্ষোভ গ্রিসের

|

তুরস্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিজেদের দেশে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীদের জড়ো করে গ্রিসের জলসীমায় ছেড়ে দিচ্ছে তারা। সম্প্রতি গ্রিস কর্তৃক প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, একটি রাবার ডিঙিতে থাকা কয়েকশ শরণার্থীকে নৌকায় করে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে গ্রিসের সীমানায়। গ্রিসের অভিযোগ, নৌকাগুলো স্পষ্টতই তুরস্কের কোস্ট গার্ডের!

অবশ্য গ্রিসের তরফ থেকে তুরস্কের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। বহুবারই এথেন্স বলে এসেছে, শরণার্থীদের নিয়ে আসা এজেন্টদের আঙ্কারা নিবৃত্ত করছে না। তারা প্রচুর মানুষকে গ্রিসে নিয়ে আসছে। এটা ইইউ চুক্তির বিরোধী।

উল্লেখ্য, সেই চুক্তি অনুযায়ী শরণার্থী-স্রোত নিজ দায়িত্বেই আটকানোর কথা তুরস্কের। এর বিনিময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে তারা পাবে বিলিয়ন ডলারের অর্থ সহায়তা।

এদিকে সাম্প্রতিক ঘটনায় আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে গ্রিসের কোস্টগার্ডের দাবি, তুরস্কের উদ্ধারকারী নৌকাগুলো শরণার্থীদের নৌকাগুলোকে বিপজ্জনক উপায়ে গ্রিসের জলসীমার ভেতর ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছিল। সেসময় গ্রিক কোস্টগার্ডের প্রতিবাদের মুখে তুরস্কের কোস্ট গার্ড ও শরণার্থীদের বহনকারী নৌকা ফিরে যায়।

গ্রিসের সমুদ্রপরিবহন মন্ত্রী জিয়ানিস প্ল্যাকিয়োটাকিসের অভিযোগ, তুরস্ক জলদস্যু রাষ্ট্রের মতো ব্যবহার করছে। তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি ভঙ্গ করছে। ইইউ-র কাছে তাই গ্রিসের আবেদন, চুক্তি মেনে চলতে যেন চাপ দেয়া হয় তুরস্ককে।

এদিকে তুরস্কও গ্রিসের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে। আঙ্কারা জানিয়েছে, গ্রিস কোনো সহযোগিতা করছে না। তারা শরণার্থীদের সঙ্গে অমানবিক ব্যবহার করছে।

মিডিয়া ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো শরণার্থীদের প্রতি গ্রিসের মনোভাবের সমালোচনা করেছে। সাংবাদিক সম্মেলনে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীকে ডাচ সাংবাদিক ইনগবর্গ বিউগেল বলেছেন, শরণার্থীদের নিয়ে তিনি যেসব কথা বলছেন তা মেনে নেওয়া যায় না। শরণার্থীদের পুশব্যাক করা নিয়ে তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর আগে অভিযোগ করেছে, গ্রিসই তাদের স্থল ও পানিসীমা থেকে শরণার্থীদের জোর করে তুরস্কে পাঠাচ্ছে।

জবাবে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বুঝতে পারছি, নেদারল্যান্ডসে রাজনীতিকদের সরাসরি প্রশ্ন করার সংস্কৃতি আছে। আমি এটাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আপনি এখানে বসে আমাকে এবং গ্রিসের মানুষকে অপমান করবেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন; এটা মেনে নেওয়া যায় না।

গ্রিসে শরণার্থীদের অবস্থা খুবই শোচনীয়- সাংবাদিকের এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের অভিবাসন নীতি খুব কঠোর কিন্তু ন্যায্য।

উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম দরিদ্র সদস্য হওয়া সত্ত্বেও গ্রিস শরণার্থীদের অন্যতম শীর্ষ আশ্রয়দাতা দেশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য দেশগুলো গ্রিসের ওপর চেপে বসা এই বোঝা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিতে আগ্রহী দেখাচ্ছে না দাবি করে বরাবরই তাদের নাখোশ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ২০১৯ সালে গ্রিসে ক্ষমতায় আসা মধ্য-দক্ষিণপন্থী প্রধানমন্ত্রী মিৎসোটাকিস। সূত্র: ডয়েচ ভেলে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply