নাটের গুরু স্মিথের ‘বিতর্কিত’ পঞ্চকাণ্ড

|

অজি অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ স্বীকার করেছেন, গতকালের বল বিকৃতির বিষয়টি তিনিই আগেই থেকেই জানতেন। দলের নেতৃত্বাস্থানীয় খেলোয়াড়রা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তার বক্তব্য অনুসারে, তিনি যেহেতু অধিনায়ক, তাই তিনি এই নীল নকশার মূল হোতা।

অজি অধিনায়ককে ঘিরে এটি প্রথম বিতর্ক নয়। এর আগেও তিনি বিতর্কে জড়িয়ে নানা সময়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন।

স্টিভ স্মিথের ৫টি বিতর্কিত কাণ্ড আপনাদের মনে করিয়ে দিতে তুলে ধরা হল:

ডিআরএস ‘প্রতারণা’

গেল বছর ভারত সফরে ডিআরএস বিতর্কে নিজেকে জড়িয়ে ছিলেন স্টিভ স্মিথ। চার ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে এলবিডব্লিউ আউট হওয়া পর ডিএসআর পদ্ধতিতে রিভিউ নেবেন কিনা, সে বিষয়ে তিনি সাজঘরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন অজি অধিনায়ক। পরে তিনি বলেছিলেন, “ওই মুহূর্তে তার মাথা কাজ করছিল না।”

সফরকারী অজিরা নিয়মিতভাবে রিভিউ-এর অপব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি।

উত্তপ্ত স্লেজিং

সর্বশেষ অ্যাশেজ সিরিজে ব্রিটিশ বোলার জেমস অ্যান্ডারসন অভিযোগ করেছিলেন, বোলাদের ‘ওভারস্টেপিং’ হলেই অজিরা দুয়ো ধ্বনি দিচ্ছিল। এই কথায় বলায় উল্টো অ্যান্ডারসনকে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় স্লেজার বলেছিলেন স্মিথ।

স্লেজিং নিয়ে সেই তর্কযুদ্ধ এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল যে মাঠের আম্পায়ার আলিম দারকে ব্যাটসম্যান স্মিথ ও বোলার অ্যান্ডারসনকে আলাদা করে দিতে হয়েছিল।

আম্পায়ারের সঙ্গে গলাবাজি

ক্রাইসচার্চে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে রিভিউ-এর একটি সিদ্ধান্ত অজিদের বিপক্ষে যাওয়ায় এ নিয়ে আম্পায়ারের সঙ্গে গলাবাজি শুরু করেছিলেন স্মিথ। এ জন্য তাকে ম্যাচ ফি’র ৩০ শতাংশ জরিমানা গুনতে হয়েছিল।

স্মিথ বলেন, “অধিনায়ক হিসেবে আমাকে আরও ভালো আচরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে আমি ভুলগুলো শিখছি ও উন্নতির চেষ্টা করছি।

রাবাদা’র আপিল

অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চলমান টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের প্রথম ইনিংসে স্মিথকে আউট করার পর তার কাঁধে ঘষা দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ফাস্ট বোলার রাবাদা। পরে নিজের দোষ স্বীকার করে আপিল করে সিরিজের পরবর্তী দুই টেস্টের নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পান রাবাদা।

এ ঘটনায় আইসিসি’র আপিল প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন অসি অধিনায়ক স্মিথ। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, “তারা ওই ঘটনাকে ইচ্ছাকৃত নয় হিসেবে দেখছে; এবং বালির মধ্যে দাগ কেটে ঠিক করছে কোনটি সঠিক, আর কোনটি সঠিক নয়।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “ছয় ঘণ্টার আপিল শুনানিতে কোনো যুক্তিই তুলে ধরা হয়নি। এই ঘটনায় জড়িত অপর ব্যক্তির (স্মিথ) কাছে কোনো কিছু জানতেও চাওয়া হয়নি।”

বল বিকৃতির কলঙ্ক

অজি খেলোয়াড় ক্যামেরন ব্যানক্রফট স্বীকার করেছেন যে তিনি বল বিকৃতি করেছেন। নিজেকে এই ঘটনার পরিকল্পনাকারীদের মূল হোতাও বলছেন অধিনায়ক স্মিথ।

স্টিভ স্মিথ বলেন, “আমরা লাঞ্চের সময় এ নিয়ে কথা বলেছিলাম। যা ঘটেছে এর জন্য আমরা গর্বিত নই। অবশ্যই এটি একটি বড় ভুল। আমি পরিস্কারভাবে বলছি, এটি দুঃখজনক, এবং এ থেকে আমরা কিছু শিখতে পারবো বলে আশা করছি।”

এই ঘটনায় ইতিমধ্যে অধিনায়কের পদ হারিয়েছেন স্টিভ স্মিথ। সাথে ডেভিড ওয়ার্নারকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সহ-অধিনায়কের পদ থেকে। এখন দেখার পালা, গঠিত তদন্ত কমিটি আর কাকে কাকে শাস্তি দেয় ও করণীয় বিষয়ে কী কী সুপারিশ করে।

যমুনা অনলাইন: এফএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply