শহীদজায়া মুশতারী শফীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী

|

ছবি: সংগৃহীত।

একাত্তরের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, নারীনেত্রী ও সাহিত্যিক শহীদজায়া মুশতারী শফীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক ও নাগরিক আন্দোলনে মুশতারী শফীর অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সাহিত্যিক, মুক্তিযোদ্ধা শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফী ১৯৩৮ সালের ১৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। মুশতারী শফী মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে এদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে সম্মুখ সারিতে ছিলেন। ’৬০ এর দশকে তিনি চট্টগ্রামে ‘বান্ধবী সংঘ’ নামের একটি নারী সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।

তার সম্পাদনায় বান্ধবী নামের একটি পত্রিকাও ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সূচনায় তার চট্টগ্রামের বাসভবনেই হয়েছিল স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা। বেতার কেন্দ্রের সংগঠক বেলাল মোহাম্মদ, আবুল কাশেম সন্দ্বীপসহ প্রগতিশীল নেতা এবং শিল্প সংস্কৃতির ব্যক্তিত্বগণের কর্মকাণ্ড ছিল এই বাসাকে ঘিরে। মুক্তিযুদ্ধে তিনি হারান তার স্বামী ডা. শফীকে। কিন্তু দমে যাননি এই মহীয়সী নারী।

মুশতারী শফী একজন সাহিত্যিক। তার রচিত গ্রন্থের মধ্যে ‘স্বাধীনতা আমার রক্তঝরা দিন’, ‘মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের নারী’ এবং ‘চিঠি, জাহানারা ইমামকে’ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া তিনি লিখেছেন অনেক প্রবন্ধ, ভ্রমণ কাহিনী, কিশোর গল্প গ্রন্থ এবং স্মৃতিচারণমূলক লেখা।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৭ এপ্রিল তার স্বামী চিকিৎসক মোহাম্মদ শফী ও ছোট ভাই এহসানুল হক আনসারীকে হত্যা করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শব্দসৈনিক হিসেবে কাজ করেছেন বেগম মুশতারী।

স্বাধীনতাযুদ্ধে অনন্য ভূমিকার জন্য ২০১৬ সালে লাভ করেন বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ। ২০২০ সালে অর্জন করেন ‘রোকেয়া পদক।’ একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির তিনি ছিলেন একজন প্রথম সারির সংগঠক ও নেত্রী। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিতে গঠিত গণজাগরণ মঞ্চেও তিনি সক্রিয় ছিলেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply