লুসি হল্ট এখন প্রিয় বাংলাদেশের নাগরিক

|

৫৭ বছর ধরে এদেশকে ভালোবেসে মানবসেবায় ব্রত থাকা লুসি হল্ট এখন বাংলাদেশের নাগরিক। শনিবার মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম সহায়তাকারী লুসি হেলেন হল্টকে বাংলাদেশের চূড়ান্ত নাগরিকত্বের সনদ তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকেলে গণভবনে ইংল্যান্ডের এই সেবিকাকে অানুষ্ঠানিকভাবে এই সনদ তুলে দেয়া হয়। এসময় জাতির জনকের ছোট মেয়ে শেখ রেহানা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।

৮৭ বছর বয়সী লুসি জীবনের ৫৭ বছরই কাটিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশে। ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে জন্ম লুসি হল্টের। বাবা জন হল্ট ও মা ফ্রান্সিস হল্ট। মানুষের সেবা করার জন্য ১৯৬০ সালে বরিশালের অক্সফোর্ড মিশনে যোগ দেন লুসি। এদেশে এসে মিশনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পড়ানো শুরু করেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বাংলাদেশে থেকে মুক্তিযুদ্ধে অাহতদের সহায়তা করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৩ সালে শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের কাছে চিঠি ও উপহার পাঠান লুসি হল্ট। মা’র হয়ে লুসিকে চিঠির জবাবও দিয়েছিলেন শেখ রেহানা।

২০০৪ সালে অবসরে যাওয়ার আগে খুলনা, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, গোপালগঞ্জ ও ঢাকায় কাজ করেছেন লুসি হল্ট। অবসর জীবনে তিনি বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনের শিশুদের মানসিক বিকাশ ও ইংরেজি শিক্ষা দিচ্ছেন।

মৃত্যুর আগে তার একটাই চাওয়া ছিল বাংলাদেশের নাগরিকত্ব। এদেশের মাটিতেই শেষ আশ্রয় খুঁজতে চান লুসি হেলেন ফ্রান্সেস হল্ট। শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি তা পেলেন।

এর আগে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি লুসি হল্টকে ১৫ বছরের মাল্টিপল ভিসা দেয় বাংলাদেশ সরকার। ভবিষ্যতের জন্য তার ভিসা ফিও মওকুফ করা হয়েছিল। এখন আর সেসবের প্রয়োজন হবে না।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করায় লুসি হল্টকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।

এক সময় শেখ ফজিলাতুন্নেসার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা ছিল জানিয়ে লুসি বলেন, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের সাথে দেখা করতে পেরে তিনি আনন্দিত।

আরও দেখুন:প্রিয় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেলেন লুসি হল্ট
আবেগাপ্লুত লুসি বললেন ‘এটা স্বপ্নের মতো’

 

যমুনা অনলাইন: টিএফ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply