‘যুক্তরাষ্ট্রে হলে দায়িত্ব পালন আর বাংলাদেশে হলে বিচার বহির্ভূত হত্যা!’

|

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবুল মোমেন।

সিলেট ব্যুরো:

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবুল মোমেন বলেছেন, এদেশে একজন পুলিশের গুলিতে মারা গেলে সেটা হয় বিচারবহির্ভূত হত্যা। আর আমেরিকার পুলিশ যে প্রতি বছর প্রায় এক হাজার লোক মেরে ফেলে তা হয় লাইন অফ ডিউটি (দায়িত্ব পালন), তার ফলে সে পার পেয়ে যায়। যদিও আমাদের দেশে অন্যায় ভাবে পুলিশ মারলে তার বিচার ও হয়।

মন্ত্রী আরও বলেন, র‍্যাবের বিরুদ্ধে যারা যুক্তরাষ্ট্রের কান ভারি করেছেন তারা সন্ত্রাসবাদী, মাদক ও মানবপাচারকারীদের লোক। এসব করে র‍্যাবকে ধ্বংস করতে চাইছে তারা। কিন্তু তা সম্ভব না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের প্রতি যে জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছেন তা থেকে সরানো যাবেনা। সেই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে র‍্যাব। শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে সিলেট পাইলট স্কুলে মুজিব কর্নার উদ্ধোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

রাত সোয়া ৯টার দিকে সিলেট সরকারী পাইলট স্কুলে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন । এই স্কুল থেকেই ১৯৫৭ সালে এসএসসি পাশ করেন তিনি। নিজের স্কুলে মুজিব কর্নারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে পেরে ভালো লাগার অন্যরকম অনুভূতির কথা বলেন তিনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কোনো আলোচনা শুরু হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা জারির পরই বড়দিন ও নিউ ইয়ারের কারণে তাদের অনেক কিছু বন্ধ। আমরা আলোচনা করবো তবে তা সময়সাপেক্ষ্য, এটা একদিনে সম্ভব না । এটা তো ইলেকট্রিকের সুইচ না যে টিপ দিলেই হয়ে গেল, সময় লাগবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, আমাদের দেশে অন্যায় ভাবে পুলিশ মারলে তার বিচার ও হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, সিলেটে পুলিশ হেফাজতে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যের বিচার হচ্ছে। মন্ত্রী আরও বলেন, যে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তারা ঢালাওভাবে অভিযোগ করেছে এটা খুবই দুঃখজনক। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে র‍্যাব জনপ্রিয়। এখনও কোথাও কোথাও তদন্ত নিয়ে ঝামেলা হলে বাদীপক্ষ র‍্যাবের কাছে তদন্তের ভার দেয়ার দাবি জানান। র‍্যাবের প্রতি অগাধ বিশ্বাস রয়েছে মানুষের। তার কারণ, র‍্যাব কখনো দুর্নীতি করে না। র‍্যাব কার্যকরভাবে কাজ করে। যুক্তরাষ্ট্রই স্বীকার করেছে র‍্যাবের কারণে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ কমেছে, র‍্যাব সন্ত্রাস দমন করেছে, মানবপাচার, মাদক পাচার বন্ধে কাজ করে যাচ্ছে। এসব বিষয় যুক্তরাষ্ট্রও লক্ষ্য করেছে কারণ, তারা বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ কমাতে চায়, মাদক মুক্ত করতে চায় , পাচার বন্ধ করতে চায়। সেই লক্ষ্যেই র‍্যাবকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। যদি কোথাও দূর্বলতা থাকে, কেউ যদি র‍্যাবকে অপব্যবহার করে তাদেরও শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। যেমন নারায়ণগঞ্জে একটি গ্রুপ এমন কাজ করেছিল, তাদের বিচার হয়েছে। অপর একটি ঘটনা চট্রগ্রামে ঘটেছিল, সেটাও বিচারাধীন আছে। সুতরাং, র‍্যাবকে অপব্যবহার করে কেউ ছাড় পায়নি। সরকার কাউকে ছাড় দেয়নি, ভবিষ্যতেও এমন অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply