অভিযোগের বোঝা নিয়ে ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী

|

সম্মেলন নেই, কমিটি হয় প্রেস রিলিজে। ৩০১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি থাকলেও অনেক নেতাই জানেন না নিজেদের কাজটা আসলে কী। সব সিদ্ধান্তের কর্তৃত্ব সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের। এমন অসংখ্য অভিযোগ ৭৩ বছরের ঐতিহ্যের ধারক, দেশের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। এমন অবস্থাতেই সংগঠনটি পালন করতে যাচ্ছে ৭৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী।

অনিয়ম ও চাঁদাবাজির অভিযোগে ২০১৯ সালে দায়িত্ব থেকে অপসারিত হন তৎকালীন সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে ভালোই সামলেছেন আল নাহিয়ান জয় এবং লেখক ভট্টাচার্য। পরের বছর ছাত্রলীগকে গতিশীল করতে সংগঠনটির পুর্নমিলনী অনুষ্ঠানে এই দুই নেতাকে ভারমুক্তের ঘোষণা দেয়া হয়। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাজারো মানুষের সমাবেশে বর্তমান শীর্ষ দুই নেতার হাতে ছাত্রলীগের দায়িত্ব তুলে দেন। এমন সৌভাগ্য আগে কারও ভাগ্যে জোটেনি।

দয়িত্ব নেয়ার পরপরই করোনার থাবা। ছাত্রলীগ নেতারাও মহামারি সামাল দেয়ার মিছিলে ছুটেছেন এ মাথা থেকে ও মাথা। কিন্তু সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগের ভূমিকা কী? প্রশ্নটা সেখানেই। এতদিন আড়ালে-আবডালে কথা বললেও এবার প্রকাশ্যেই মুখ খুললেন খোদ কেন্দ্রীয় কমিটির সামনের সারির নেতারা।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ বলছেন, সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদকের একান্ত ইচ্ছায় রাতের আঁধারে কমিটি করলে বিভিন্ন প্রশ্ন ওঠাটাই স্বাভাবিক।

আগের হালের পথেই নাকি হাঁটছেন শীর্ষ দুই নেতা। বিভিন্ন কমিটি নিয়ে আছে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ। নিজেদের পছন্দের প্রার্থীরা বনে যাচ্ছেন নেতা। অভিযোগ রয়েছে এজন্য সম্মেলনের বদলে প্রেসরিলিজেই ভরসা।

আরেক সহ সভাপতি সোহান খান বলছেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষিত হওয়ার পর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনস্টারের ভূমিকা পালন করছেন। আর উপ প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মেশকাত হাসান মনে করছেন, নতুন কমিটি হলে পুরনো নেতারা পদ হারাবেন, এই ভয়েই কমিটি দিচ্ছেন না তারা।

সম্মেলন না করা নিয়ে যুক্তি আছে জয় ও লেখকের। করোনা সংক্রমণ বিবেচনায় সম্মেলনের মত কর্মসূচি এড়িয়ে চলছেন। যদিও নিজেদের চলাচল সব সময় শতাধিক কর্মীবেষ্টিত। আর বাকি অভিযোগগুলো ভুল বোঝাবুঝির কারণে বলে দাবি তাদের।

সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দায়িত্ব বণ্টন করতে পারেননি তারা। তবে এখন প্রতিষ্ঠান খোলায় তারা দায়িত্ব বণ্টন করতে শুরু করেছেন। আর সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলছেন, এ পর্যন্ত ২৫টি কমিটি দিয়েছেন তারা। এর মধ্যে ১০ থেকে ১২টি কমিটি ‘প্রেস রিলিজভিত্তিক’।

কমিটির মেয়াদ পেরিয়েছে। এখন মূল দলের নির্দেশনা পেলে দ্রুতই সম্মেলনের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply