‘বেশি সময় সুস্থ রাখা সম্ভব হবে না আন্দোলনকারীদের’

|

শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছেন আন্দোলনকারীরা।

অনশনের পঞ্চম দিনে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শাবিপ্রবির বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী। সেই সাথে নতুন অনেকে যোগ দিয়েছেন কর্মসূচিতে। চিকিৎসকরা বলেছেন, এভাবে বেশি সময় আন্দোলনকারীদের সুস্থ রাখা সম্ভব হবে না।

চিকিৎসকরা বলছেন, আন্দোলনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ শিক্ষার্থী দুর্বল হয়ে পড়েছে শারীরিকভাবে। তারা জানান, কয়েকজনের রক্তচাপ কম থাকায় তাদের স্যালাইন দেয়া হয়েছে। বাকি কয়েকজনের রক্তচাপ ঠিক আছে। তবে অনশনকারীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে আসছে দ্রুত। তাদের এভাবে বেশি সময় রাখা সম্ভব হবে না বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের একদফা দাবি। ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। নিজেদের মধ্যে সব আলোচনা ও সিদ্ধান্তের শেষপ্রান্ত একটাই, আর তা হচ্ছে ভিসির পদত্যাগ।

অনশনের পঞ্চম দিনে এসে উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছেন, আন্দোলনটি অহিংস হলেও ভিসির বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন তারা। সংকট সমাধানের কোনো খবর নেই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। যারা এখনও আমরণ অনশনে, তাদের বেশিরভাগই হয়ে পড়েছে শারীরিকভাবে দুর্বল। এদিকে, প্রতিদিনই বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের লোকজন একাত্মতা জানাচ্ছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে।

প্রতিদিনই বিভিন্ন পেশাজীবি ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা আসছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা জানাতে। সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, এই সঙ্কটের জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষ। কারণ, উপাচার্যের উচিত হয়নি শিক্ষার্থীদের সরাসরি প্রতিপক্ষ বানানো।

ইমজার সভাপতি বাপ্পা ঘোষ চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থার দিকে খেয়াল রেখে তাদের দাবির প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হোক, এটাই আমরা চাই।

সাংস্কৃতিককর্মী মিশফাক আহমেদ মিশু বলেন, যে দাবিতে শিক্ষার্থীরা অনশন করছেন তা অত্যন্ত যৌক্তিক দাবি। কারণ, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পুলিশ ডেকে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের বেধড়কভাবে পেটানো কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়।

আরও পড়ুন: ভিসির বাসভবনে পুলিশ ছাড়া অন্য কাউকে প্রবেশ করতে দেবে না আন্দোলনকারীরা

এদিকে সংসদও উত্তপ্ত ছিল শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ইস্যুতে। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ দাবি জানিয়েছেন ভিসির পদত্যাগের। তিনি বলেছেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে মন্ত্রীর নিজেরই সেখানে যাওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, আন্দোলনরত অবস্থায় যে ছাত্ররা ঢাকায় আসবে না, এটা জানা কথা। ছাত্রজীবনে আন্দোলন করার সময় আমরা কোনোদিন কারো বিয়ের দাওয়াত, মিলাদের দাওয়াতও পেতাম না। কিন্তু আন্দোলনের সময় বঙ্গভবনের দাওয়াতও আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, প্রয়োজনে মন্ত্রীর উচিত ছিল, ডাবল মাস্ক পরে সেখানে যাওয়া। এছাড়া শাবিপ্রবি ভিসি কর্তৃক পুলিশ ডেকে ছাত্রদের ওপর হামলা করার ঘটনা নিয়ে ফিরোজ রশীদ বলেন, এটা কি মোনায়েম খানের যুগ নাকি, যে কথায় কথায় পুলিশ ডেকে আনবেন?

আরও পড়ুন: ভিসির বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে আন্দোলনকারীরা

এম ই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply