রুশ আক্রমণ থেকে বাদ যাচ্ছে না ইউক্রেনের হাসপাতালগুলোও। প্রায় প্রতিদিনই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে রুশ হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর ৭০টির বেশি হামলা হয়েছে। যাতে প্রাণ গেছে প্রায় একশ মানুষের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধের কৌশল হিসেবেই টার্গেট করা হচ্ছে হাসপাতালগুলোকে। যা স্পষ্টই যুদ্ধাপরাধ।
যে কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে সবচেয়ে নিরাপদ মনে করা হয় হাসপাতালকে। কিন্তু উল্টো চিত্র ইউক্রেনে। দেশটির হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে অনেকটা টার্গেট করেই হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে একেরপর এক ভবন। তৈরি হচ্ছে মানবেতর পরিস্থিতি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৭০টির বেশি রকেট হামলা হয়েছে কেবল হাসপাতাল আর অ্যাম্বুলেন্সকে লক্ষ্য করে।
পুতিন বাহিনীর এমন আগ্রাসী আচরণকে যুদ্ধাপরাধের সাথে তুলনা করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। বলছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি ইউরোপ।
যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ বিষয়ক বিশ্লেষক ডেভিড সেফার বলছেন, যুদ্ধের আইন বলে স্কুল, হাসপাতাল এবং দর্শনীয় স্থানগুলোতে কখনও হামলা চালানোর সুযোগ নেই। পরিস্কারভাবে যা যুদ্ধাপরাধের শামিল। তবে এই নীতি মানার জন্য মানসিক প্রস্তুতি প্রয়োজন। যুদ্ধক্ষেত্রে সব সময় নিরাপদ বলে বিবেচিত হাসপাতলে হামলার দায়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের পরামর্শও দিচ্ছেন তিনি। যুদ্ধ বিষয়ক এই বিশ্লেষক বলেন, আমার মনে হয় দিন শেষে কোনো সন্দেহ ছাড়াই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত রুশ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলবে। কারণ রাশিয়া যেভাবে ইউক্রনের আপাদমস্তোক আগ্রাসন চালাচ্ছে তাতে ছাড় পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে হাসপাতালগুলোতে হামলা বন্ধ করতে হবে।
শুধু ইউক্রেনেই নয়, সিরিয়ায়তেও একই ধরনের হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার তথ্য বলছে, ২০১৫ সালের পর থেকে দেশটির স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে আড়াই শতাধিক হামলা চালিয়েছে পুতিন সরকার।
/এডব্লিউ
Leave a reply