স্টাফ করেসপনডেন্ট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্কুল শিক্ষক দম্পতি মকবুল হোসেন, রেখা বেগম এবং তাদের তিন সন্তানের মৃত্যুর বিষয়টি সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে শেষ করা হয়েছে। সালিশে ২৪ লাখ টাকায় রফা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হাজী মো. ছফিউল্লাহ মিয়া এ সালিশি বৈঠক করেন।
সালিশে রেখার গর্ভের সন্তানের জন্ম না হওয়ায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে ধরে জরিমানা করা হয়। মাথাপিছু ৬ লাখ হিসাবে মোট ২৪ লাখ টাকা জরিমানা করে আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে তা পরিশোধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
সালিসের বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হাজী মো. ছফিউল্লাহ মিয়া জানান মকবুলের অনেক টাকা ঋণ আছে। মোট জরিমানা থেকে কিছু টাকা মসজিদ-মাদ্রাসায় এবং বাকি টাকা মকবুলের মা ও শ্বশুরকে দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, এ ঘটনায় অপরাধ অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেবে পুলিশ। দ্রুত সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে। মামলায় আপস রফাদফার কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের শরীয়তনগর এলাকার আলাই মিয়ার পাঁচতলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবনে আগুন লাগে। ওই ভবনের নিচতলায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন স্কুলশিক্ষক মকবুল হোসেন।
ওই অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে মকবুল, তার স্ত্রী রেখা আক্তার এবং তাদের দুই শিশু সন্তান জয় ও জুবায়ের মারা যায়। এ ছাড়া এ ঘটনার পর দগ্ধ রেখা আক্তারের গর্ভে থাকা মেয়ে সন্তানের জন্ম হয় মৃত অবস্থায়।
ঘটনার পাঁচ দিন পর ২৭ ফেব্রুয়ারি আশুগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে উপজেলা প্রশাসন। মার্চের প্রথম দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির সদস্যরা।
তদন্ত কমিটি একাধিক সদস্য জানান তদন্তে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করা হয়েছে। কোড না মেনে ওই ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ভবন মালিকের গাফিলতি ও গ্যাস–সংযোগে ছিদ্র থাকার কারণে শিক্ষক মকবুলের বাসায় গ্যাস পুঞ্জীভূত হয়ে ছিল বলে তদন্তে উঠে আসে।
/এসএইচ
Leave a reply