যে ৯টি কথা কখনই অফিসের বস’কে বলবেন না

|

অফিসের বসের সাথে আপনার সম্পর্ক ভালো থাকতে পারে, হয়ে যেতে পারে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কিন্তু কখনই পেশাদারিত্ব বাহিরে কথা বলবেন না। এরকম ঘটলে আপনার ক্যারিয়ারের জন্য তা হুমকি হতে পারে। আসুন জেনে নেই এমন কিছু কথা আছে যা অফিসের বস বলা ঠিক নয়।  লিখেছেন তালহা বিন জসিম

১. আমার হাতে সময় নেই

আপনি খুবই কাজের চাপে ব্যস্ত অথবা আপনি এখনই বের হয় যাবেন। তখন অফিসের বস যদি আপনাকে কোন কাজ দিতে চায় তাহলে কখনই বলবেন না যে আপনার হাতে সময় নেই। খুব ব্যস্ত সময়ে বস কোন কাজের কথা বললে তার থেকেই সিদ্ধান্ত নিন, কোন কাজটি আপনি প্রাধিকার ভিত্তিতে আগে করবেন। এতে করে আপনার ইমেজ তৈরি হবে যে, আপনি কাজ করতে পারেন।

২. অপরকে দোষারোপ করবেন না

নিজে কোন কাজ করতে না পারলে সবসময় আপনার অপর সহকর্মীকে দোষারোপ করবেন না। পরস্পর দোষারোপ করা বসরা ভালোভাবে নেন না। যদি আপনি দোষী না হোন তাহলে তা বসকে জানান, ব্যাখ্যা করুন। কিন্তু অপরকে দোষ দিবেন না। এমনকি নিজের দোষের কারণে কোন কাজ না করতে পারলে অপরকে দোষ না দিয়ে নিজের দোষ স্বীকার করে নেয়াটা ইতিবাচক।

৩. নতুন চাকরি খুঁজছেন

নিজের ক্যারিয়ারের জন্য হয়তো আপনাকে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতে হতে পারে। বসের সাথে ভালো সম্পর্ক, আপনি হয়তো ভাবছেন বস আপনার ভালোটাই চায়। এরকম ভালো সম্পর্ক থাকলেও কখনই বলবেন না যে আপনি চাকরি খুঁজছেন। কারণ এতে করে আপনাকে বস আর আপনাকে নিজের প্রতিষ্ঠানের লোক মনে করবেন না। আপনার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলবে। তাই চাকরি খোঁজার সময় বসকে না বলে, বরং চাকরি ছেড়ে দেয়ার সময় প্রতিষ্ঠানকে আগে থেকে নোটিশ দিন। এটাই হবে পেশাদারি আচরণ।

৪. কাজটি কিভাবে করতে হয় আমি জানি না

যদি বস আপনাকে কোন কাজ দেয় তাহলে প্রথমেই বলবেন না যে, কাজটি কিভাবে করতে হয় আপনি জানেন না। বরং আপনার সহকর্মীর সহযোগিতা নিন অথবা যিনি কাজটি করতে পারেন তার সাহায্য নিন। তারপর ইন্টারনেটে টিউটোরিয়ালতো আছেই। এতে করে আপনার ওপর ইতিবাচক ধারণা তৈরি হবে যে আপনি শিখতে আগ্রহী। কিন্তু প্রথম দফায়ই কিভাবে করবো বললে আপনার যোগ্যতার ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে।

৫. টাকার টানাপোড়েনে আছেন তাই বেতন বাড়িয়ে দিন

আপনার সংসারে অর্থকষ্ট বা টানাপোড়েন থাকতে পারে কিন্তু এটাকে কারণ দেখিয়ে কখনও বেতন বাড়ানোর কথা বলবেন না। বরং তার থেকে আপনার কাজের যোগ্যতা ও দক্ষতা দেখিয়ে বেতন ন্যাগোশিয়েসন করুন। ব্যক্তিগত জীবন যেমন, মায়ের অসুখ, ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার খরচ, ইত্যাদি বেতন বাড়ানোর আলাপে কখনই বলবেন না। তারচেয়ে আপনার দক্ষতা এমনভাবে উপস্থাপন করুন যে প্রতিষ্ঠানে আপনাকে প্রয়োজন।

৬. আগের বস কাজটি এভাবে করতেন না বা এভাবে করতেন

কর্মক্ষেত্রে আপনার বসের পরিবর্তন হতে পারে। কারো কারো কাজের ধরণটা আলাদা আলাদা। তাই নতুন বসকে বলবেন না যে আগের বস কাজটি এভাবে করতেন। তার থেকে বলুন, কাজটি এভাবে করা যায় কিনা। যখন আপনি পুরনো বসের কাজের কথা বলবেন তখন নতুন বস মনে করবে যে আপনি তার প্রতি অনুগত নন। অথবা আপনি এই পরিবর্তনটা মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না। এতে করে আপনার প্রতি একটা ধারণা হতে পারে যে আপনি পরিবর্তন সহজভাবে নেন না। ফলে নতুন বস তার কোন প্রজেক্টে আপনাকে না রাখার সম্ভাবনা বেশি কারণ তিনি আপনার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পারছেন না।

৭. আজ আমি একটু আগে বের হয়ে যেতে চাই

আপনার ডাক্তার দেখাতে হবে বা একটু জরুরি ব্যক্তিগত কোন কাজ পরে গেছে। কখনই অফিসে ঢুকেই বসকে বলবেন না যে, আজকে একটু আগে আগে বের হতে চান। তার থেকে কাজ করুন, আগে বলা এজন্য ঠিক হবে না যে, অফিসে ঢুকে তো আপনি কিছুই করেন নাই। আর এভাবে বললে আপনি ভালোভাবে কাজ করলেও বস মনে করবে আজ আপনার কাজের প্রতি মনোযোগ নেই। সবচেয়ে ভালো, তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে, আপনার চলে যাওয়াটা উপস্থাপন করা।

৮. কাজ করতে বিরক্ত লাগছে/ আজ বিষণ্ন বা উদাসীন লাগছে

অফিস আপনার কাজের জন্য বেতন দিয়ে থাকে, তাই বস সব সময় চায় উৎসাহী কর্মচারী। তাই বসকে কখনই বলবেন না আজ মন খারাপ, কাজ করতে বিরক্ত লাগছে, আজ মনটা উদাসীন, কাজ করতে ভালো লাগছে না। এভাবে বললে বসের কাছে আপনার দায়িত্বহীনতা প্রকাশ পেয়ে যায়।

৯. গতরাতের পার্টির হ্যাংওভার

বসের সাথে ভালো সম্পর্ক কখনও কখনও বন্ধুত্বে রূপ নেয় তাই বলে রাতের পার্টিতে কি করেছেন তা বলতে যাবেন না। আর অফিসে এসে বলবেন না যে, আমার এখনও ঘোর কাটেনি। আবার এর কারণে যদি অফিসে আসতে দেড়ি হয় তা উল্লেখ না করাই ভালো। বলতে যাবেন না যে রাতে ভালো ঘুম হয়নি তাই অফিসের কাজে মনোযোগ নেই। সব সময় মনে রাখুন দিনশেষে এই ব্যক্তিই আপনার প্রমোশন, বেতন ভাতা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply