হট্টগোলের পর সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনে সভাপতি ও সম্পাদক আওয়ামী লীগেই

|

ছবি: সংগৃহীত

এক মাসের বেশি সময় আগে অনুষ্ঠিত হওয়া সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হয়েছে। তাতে সভাপতির সাথে সম্পাদক পদেও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা বিজয়ীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

বুধবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে সম্পাদক পদে পুনরায় ভোট গণনা নিয়ে সমিতি ভবনের সম্মেলন কক্ষের সামনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এরপর রাতে ফলাফল ঘোষণা করেন আইনজীবী অজি উল্লাহর নেতৃত্বে নির্বাচন উপ কমিটি। তাতে সভাপতির সাথে সম্পাদক পদেও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা বিজয়ীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এছাড়াও দুটি সহ সম্পাদক এবং কোষাধ্যক্ষসহ অপর সাতটি পদে জয়ী হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলের প্রার্থীরা।

ফলাফল অনুসারে, সভাপতি পদে সাদা প্যানেলের মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ৩ হাজার ২৪৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নীল প্যানেলের মো. বদরুদ্দোজা পেয়েছেন ২ হাজার ৪৭৯ ভোট। আর সম্পাদক পদে সাদা প্যানেলের আবদুন নূর ২ হাজার ৮৯১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নীল প্যানেলের মো. রুহুল কুদ্দুস পেয়েছেন ২ হাজার ৮৪৬ ভোট।

অন্যদিকে, সাদা প্যানেল থেকে সহ সভাপতি দুটি পদে মো. শহীদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হোসেন এবং সদস্যপদে ফাতেমা বেগম, শাহাদাত হোসেন ও সুব্রত কুমার কুন্ডু জয়ী হয়েছেন। নীল প্যানেল থেকে সহ সম্পাদকের দুটি পদে মাহফুজ বিন ইউসুফ ও মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. কামাল হোসেন এবং চারটি সদস্যপদে মাহদীন চৌধুরী, গোলাম আক্তার জাকির, মঞ্জুরুল আলম ও কামরুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন।

গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচন পরিচালনা করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ ওয়াই মসিউজ্জামানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের নির্বাচন উপ-কমিটি। এর পরদিন ১৭ মার্চ বিকেলে ভোট গণনা শুরু হয়ে চলে রাত পর্যন্ত। সভাপতি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের প্রার্থী সিনিয়র আইনজীবী মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির এগিয়ে ছিলেন। সম্পাদক পদে এগিয়ে ছিলেন বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলের প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস। কিন্তু অনিয়মের অভিযোগ তুলে সাদা প্যানেল থেকে সম্পাদক প্রার্থী আব্দুন নূর দুলাল পুনরায় ভোট গণনা চেয়ে নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত আহ্বায়ক কমিটির কাছে আবেদন করেন। এ নিয়ে ওইদিন রাতে দুই পক্ষে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে অচলাবস্থার মধ্যে এ ওয়াই মসিউজ্জামান সমিতির কমিটির কাছে পদত্যাগপত্র দেন। এরপর ভোটের ফলাফল ঘোষণা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়।

দীর্ঘ এক মাস ১৩ দিন পর মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ সভাপতি (সাদা প্যানেল সমর্থিত) আইনজীবী মো. অজি উল্লাহ স্বাক্ষরিত এক লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিকদের বলেন, ১২ এপ্রিল সমিতির কার্যকরী কমিটির মেয়াদের শেষ এক সভায় তাকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি নির্বাচন উপকমিটি করা হয়েছে। বর্তমানে সমিতির কার্যক্রম ‘অচলাবস্থা’ বিরাজ করছে উল্লেখ করে অজি উল্লাহ বুধবার নির্বাচনের অসম্পন্ন কাজ সম্পন্ন করবেন বলে ওই সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণাও দিয়েছিলেন। তবে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে নীল প্যানেল থেকে সম্পাদক পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মো. রুহুল কুদ্দুস দাবি করেন, ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সভার কোনো আইনি ভিত্তি নেই। কাজেই ওই সভায় গৃহীত যেকোনো সিদ্ধান্ত অবৈধ।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply