নির্বিচারে প্লাস্টিক আর ময়লা-আবর্জনা ফেলে দূষিত করা হচ্ছে সমুদ্রকে। সাগরতল হয়ে উঠছে যেন বিশাল ভাগাড়। এই অবহেলায় জীববৈচিত্র্যের ওপর চরম নেতিবাচক প্রভাবের শঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। এ উদ্বেগের মধ্যেই আজ (৮ জুন) পালিত হচ্ছে বিশ্ব সমুদ্র দিবস। দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন দেশে চলছে সমুদ্র পরিচ্ছন্নতার মহাযজ্ঞ। সাগরের তলদেশ থেকে শত শত টন বর্জ্য তুলে এনে দেয়া হচ্ছে সচেতনতার বার্তা।
সমুদ্রের তলদেশ থেকে তুলে আনা হচ্ছে একের পর এক পরিত্যক্ত মাছ ধরার জাল। গ্রিসের ইথাকা দ্বীপে সাগর পরিচ্ছন্নতার অভিযান শুরু করেছে একটি পরিবেশবাদী সংগঠন। বিশ্ব সমুদ্র দিবসে সাগর দূষণ নিয়ে সচেতনতা ছড়ানোর লক্ষ্যেই নেয়া হয়েছে এমন পদক্ষেপ। দুই সপ্তাহব্যাপী অভিযানে গভীর সমুদ্র থেকে তুলে আনা হয়েছে ২৩ টনের বেশি বর্জ্য; যা বছরের পর বছর সমুদ্র তলদেশের জীববৈচিত্র্য বিনষ্টের কারণ।
ব্রাজিলেও রিও ডি জেনিরোতেও চলছে একই কার্যক্রম। স্থানীয় জেলেদের নিয়ে সাগর থেকে তুলে আনা হচ্ছে প্লাস্টিক বর্জ্য। সম্প্রতি সমুদ্রে দূষণের জেরে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে এলাকাটির জীববৈচিত্র্যে। গভীর সাগরেও মিলছে না মাছ। এতে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে সাগরের ওপর নির্ভরশীল মানুষের জীবন। এমন একজন বলেন, আগে কাছাকাছি প্রচুর মাছ পেতাম। এখন গভীর সমুদ্রে গিয়েও মাছ পাই না। এতে আমাদের খরচ বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু পর্যাপ্ত লাভের মুখ দেখি না।
আরেক ব্যক্তি বলেন, ৫০ বছর আগে সাগরের যে রূপ দেখেছি; আজ তার পুরোই উল্টো। মানুষ এখন আর সচেতন না। সাগরকে ভাগাড় মনে করে যা খুশি ছুঁড়ে মারছে। কিন্তু আমাদের মনে রাখা উচিত, সাগরই আমাদের বাঁচার একমাত্র উৎস।
কয়েক দশক ধরেই জ্যামিতিক হারে বেড়ে চলেছে সমুদ্রে দূষণের মাত্রা। এর মূল কারণ হিসেবে বিশ্বব্যাপী আশঙ্কাজনক হারে প্লাস্টিকের ব্যবহার বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন গবেষকরা। একই সাথে মাছ ধরার নৌকা, প্রমোদতরী, তেলবাহী জাহাজ ও অন্যান্য জলযানের রাসায়নিকও বাড়াচ্ছে দূষণ।
২০১৫ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সমুদ্র তলদেশে শুধুমাত্র প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ ১৫ কোটি টন। ২০৪০ সাল নাগাদ যা দাঁড়াবে ৬০ কোটি টনে।
আরও পড়ুন: সোনার মোহর আর রত্নে ঠাসা এক জাহাজ নিয়ে কলম্বিয়ায় তোলপাড়
/এম ই
Leave a reply