সম্প্রতি, দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে জাতীয় পতাকা ইস্যুতে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ওপর আবারও চড়াও হয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। (ছবি: সংগৃহীত)
ফিলিস্তিনে দখলকৃত ভূখণ্ডের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় ইসরায়েল, এমন তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে। সংস্থাটির একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের মূল কারণ তেল আবিবের দখলদারিত্ব ও বৈষম্যমূলক নীতি। এদিকে, ফিলিস্তিনি পতাকার ওপর ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার ঘটনায় বিক্ষোভ হয়েছে গাজা ও জেরুজালেমে। খবর আলজাজিরার।
সম্প্রতি, জেরুজালেম থেকে ফিলিস্তিনের জাতীয় পতাকা সরিয়ে ফেলাকে কেন্দ্র করে চলছে উত্তেজনা। প্রতিবাদে জেরুজালেম, গাজা আর পশ্চিম তীরে জাতীয় পতাকা নিয়ে বিক্ষোভে নামেন হাজারো ফিলিস্তিনি।
এর আগে, ‘ফিলিস্তিনিদের পতাকা ওড়ানোকে ইসরায়েলের জন্য হুমকি’ বলে আখ্যা দিয়েছে নাফতালি বেনেট সরকার। এরইমধ্যে ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ানো বন্ধে আইনও পাস করেছে দেশটির পার্লামেন্ট নেসেট। প্রতিবাদে ফিলিস্তিনিরা বলছেন, নিজেদের জাতীয় পতাকা ওড়ানোর পূর্ণ অধিকার তাদের রয়েছে।
পতাকা ইস্যুতে জেরুজালেমের পার্লামেন্ট সদস্য আহমাদ তিবি বলেন, এটা আমার জাতীয় পতাকা। শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত এই পতাকা আমি উড়িয়ে যাবো। যদি আমার মৃত্যুও হয় তবুও কোনো পরোয়া করি না।
আহমাদ তিবি আরও বলেন, আমাদের ভূখণ্ড দখলের পর এখন আমাদের জাতিসত্ত্বার ওপর হামলা করতে চাইছে দখলদার ইহুদিবাদীরা। এ কারণেই পতাকা উত্তোলনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তারা। কট্টোর ফ্যাসিস্ট মানসিকতা এবং জাতিগত বিদ্বেষ থেকেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল সরকার। প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনিদের শুধু গুলি করে হত্যা করাই নয়, তাদের করা আরও অসংখ্য অপরাধকে স্বীকৃতি দিতেই এমন আইন করা হয়েছে।
এমন উত্তেজনার মধ্যেই, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব ইস্যুতে নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মানবাধিকার পরিষদ গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের লক্ষ্য ফিলিস্তিনের দখলকৃত ভূখণ্ডে নিজেদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা।
প্রতিবেদনে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনে চলমান অস্থিতিশীলতার জন্য সরাসরি দায়ী করা হয় তেল আবিবের বৈষম্যমুলক নীতিকে। যদিও জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনকে অগ্রাহ্য করে তেল আবিব বলছে, ইসরায়েলে থাকতে হলে তাদের আইন মেনে চলতে হবে ফিলিস্তিনিদের।
ইসরায়েলে ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির নেতা এলি কোহেন এ ব্যাপারে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র গণতান্ত্রিক দেশ ইসরায়েল। এখানে থাকতে হলে এই দেশের আইন মেনেই থাকতে হবে সবাইকে। যার আইন মানার ইচ্ছা হবে না তারা জর্ডান কিংবা অন্য দেশে আশ্রয় নিক।
প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের বসতিগুলোতে বর্তমানে সাত লাখের বেশি ইসরায়েলি বসবাস করছে। অন্যদিকে, ওই এলাকায় বংশ পরম্পরায় বাস করছেন ৩০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি।
/এসএইচ
Leave a reply