জটিল রোগের মোকাবেলা করেছেন যে তারকারা

|

দুদিন আগেই ভক্তদের পিলে চমকে দিয়েছেন বেবিখ্যাত পপ তারকা জাস্টিন বিবার। র‍্যামজি হান্ট সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে বিবারের মুখের এক পাশ হয়ে পড়েছে পক্ষাঘাতগ্রস্ত। ইনস্টাগ্রামে নিজের একটি ভিডিও পোস্ট করেন তিনি। বলেছেন, আপাতত তিনি জানেন না যে রোগটা সারতে কতদিন লাগতে পারে। এদিকে হলিউড কিংবা বলিউডেও আছেন এমন সব হাইভোল্টেজ তারকা যারা কিনা লড়াই করে জিতেছেন কঠিন সব রোগের বিরুদ্ধে।

কয়েক বছর আগে জাস্টিন বিবারের সাবেক প্রেমিকা আরেক পপ তারকা সেলেনা গোমেজও হঠাৎ ভক্তদের চমকে দিয়েছিলেন বিরল রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়ে। জটিল লুপাস রোগে ভুগছিলেন সেলেনা। লুপাস এমন একটি রোগ যার প্রভাবে শরীরের অ্যান্টিবডি সুস্থ কোষগুলোকে আক্রমণ করে। এই রোগে শরীরের ত্বক-কিডনি-ফুসফুস এমনকি হৃদযন্ত্রও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সেলেনার অবস্থা এতোই খারাপ হয়ে পড়ে যে, শেষ পর্যন্ত তার কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হয়। নিজের কিডনি দিয়ে সেলেনার জীবন বাঁচান তার সবচেয়ে কাছের বান্ধবী ফ্রান্সিয়া রাইসা।

২০১৬ সাল থেকে ‘ফাইব্রোমায়ালজিয়া’ নামে একটি বিরল রোগে আক্রান্ত মার্কিন পপ গায়িকা লেডি গাগা। রোগটির কারণে সারা শরীরে তীব্র ব্যথা সইতে হয় তাকে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি শরীরে ব্যথার পাশাপাশি অবসন্নতায় ভোগেন। পাশাপাশি ঘুমেরও ব্যঘাত ঘটে থাকে। সবাইকে ‘ফাইব্রোমায়ালজিয়া’র ব্যাপারে সচেতন করে তোলার জন্য লেডি গাগা ২০১৭ সালে একটি তথ্যচিত্রও নির্মাণ করেন, যা সে বছর টরেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয়।

বয়স মাত্র উনিশ, এরই মধ্যে বিখ্যাত নেটফ্লিক্স সিরিজ ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস’ এ জাস্টিনের ভূমিকায় অভিনয় করে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী তারকা হয়ে উঠেছে, গ্যাটেন মাতারাজ্জো। তবে শৈশব থেকেই গ্যাটেন বিরল জিনগত রোগ- ‘ক্ল্যাভিকুলার ক্র্যানিয়াল ডাইসোস্টোসিস’ এ ভুগছে। এর ফলে তার কোনো কলারবোন কিংবা ব্যাকবোন নেই। এমনকি তার দাত এবং শরীরের অন্যান্য হাড়ও বাড়তে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।

এদিকে ৮০ বছর বয়সেও শুটিং সেটে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বলিউড ‘শাহেনশাহ’ অমিতাভ বচ্চন। কিংবদন্তি এ অভিনেতা বেঁচে আছেন মাত্র ২৫ শতাংশ সক্রিয় যকৃৎ নিয়ে! বর্ষীয়ান এ অভিনেতার যকৃতের ৭৫ শতাংশ অংশই অকার্যকর হয়ে গেছে—হেপাটাইটিস বি-র মতো মারাত্মক ভাইরাসের আক্রমণে।

ক্যারিয়ারের সোনালী যুগে মারাত্মক সমস্যায় পড়েছিলেন সালমান খান। ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। মুখের ত্বকে থাকা ট্রাইজেমিনাল স্নায়ুর জ্বালাপোড়া ঘটায় এটি। এই জ্বালাপোড়া এতই বেড়ে যায় যে, রোগী আত্মহত্যার চিন্তাও করে বসেন। তবে দাঁতে দাঁত চেপে রোগটার বিরুদ্ধে লড়াই করে আজ এতদূর এসেছেন বলিউডের ভাইজান।

কোলন ক্যান্সারের সাথে দীর্ঘদিন লড়াই শেষে হার মেনেছেন ইরফান খান।

অন্যদিকে, ক্রনিক সাবডিউরাল হেমাটোমা নামের জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন হৃতিক রোশন। কোনো এক সিনেমার শুটিং করতে গিয়ে আঘাত পান হৃতিক। পরে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করে দূর করতে হয়েছিল জমাট বাঁধা রক্ত। ২১ বছর বয়সে বলিউড এ হার্টথ্রব আবার স্কোলিওসিসেও আক্রান্ত ছিলেন। যে রোগে বেঁকে যায় তার মেরুদণ্ড। সেই রোগ থেকেও সুস্থ হয়েছেন হৃতিক।

পর্দায় মানুষকে বিনোদন দেয়ার মতো বড় দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করেন তাঁরা। মানুষকে কখনো হাসান, কখনো কাঁদান। ক্যামেরার সামনে নিজেকে উজাড় করে দেন তারা। অথচ পর্দার এ মানুষগুলো কত যন্ত্রণায় ভুগে দিনযাপন করেন, সে খবর পর্দার সামনে দর্শক আঁচও করতে পারেন না। দিনের পর দিন তারকাদের অনেকেই ক্যান্সারের মতো রোগের সঙ্গেও যুদ্ধ করছেন, কেউ ভুগছেন মারাত্মক বিষণ্নতায়, যন্ত্রণায় আত্মহত্যাও করতে গিয়েছিলেন কেউ কেউ। তারপরও সব জয় করে ফিরে এসেছেন তারা। হয়তো তাদের দেখেই সাধারণ মানুষও উদ্বুদ্ধ হবে নতুন করে বাঁচতে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply