অনিয়ম-অব্যবস্থাপনায় ভরা সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে পদে পদে উপেক্ষিত হয়েছে নীতিমালা। প্রয়োজনীয় ৫টি সংস্থার অনাপত্তিপত্রও নেই। নিরাপত্তাসহ অন্তত ১২ ধরনের ঘাটতির তথ্য মিলেছে তদন্তে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ অনেক আগে শোকজ করলেও তা আমলেই নেয়া হয়নি।
কন্টেইনার ডিপো পরিচালনার লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম শর্ত হলো, বিপজ্জনক পণ্য ব্যবস্থাপনায় মানতে হবে আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থা প্রণীত ‘ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ডেঞ্জারাস গুডস’ বা আইএমডিজি কোড। সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোয় সম্পূর্ণ উপেক্ষিত ছিল এ নীতিমালা। বিপজ্জনক রাসায়নিকের পাশে রাখা হয়েছিল পোশাকসহ অন্য পণ্যের কনটেইনার। এ জন্য ডিপো কর্তৃপক্ষকে ২০২০ সালে কারণ দর্শানোর নোটিশও দিয়েছিল কাস্টমস। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার সালাউদ্দিন রিজভী জানান, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অগ্নি নির্বাপনে সব সুযোগ সুবিধা রাখা বাধ্যতামূলক হলেও, তা ছিল না বিএম ডিপোতে। আর্ন্তজাতিক এবং দেশীয় নীতিমালা পরিপন্থী এমন অন্তত ১০ থেকে ১২ ধরণের ঘাটতির তথ্য বেরিয়ে এসেছে অগ্নিকাণ্ডের পর গঠিত বিভিন্ন সংস্থার প্রাথমিক তদন্তে। বাকি ১৭টি ডিপোর চিত্রও অনেকটাই একইরকম।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ম্যানেজার কফিল উদ্দিন বলেন, প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কোম্পানিকে আমরা আগে থেকেই বলে থাকি। সেই ব্যবস্থাগুলো নিলে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের সংখ্যা অনেকাংশেই কমানো সম্ভব।
শুধু তাই নয়, নির্ধারিত ১১ টি সংস্থার মধ্যে পরিবেশ অধিদফতরসহ ৫টি সংস্থারই অনাপত্তিপত্র নেয়নি বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষ; যা উঠে এসেছে আরও ৬ মাস আগে দেয়া বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এক প্রতিবেদনে। বাফার পরিচালক খায়রুল আলম সুজন জানান, কিছু ভুলত্রুটির কারণেই হয়তো এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। হয়তো যেভাবে পণ্যগুলো সংরক্ষণ করা দরকার ছিল, সেভাবেই করা হয়নি।
এতো সব অনিয়ম, অব্যবস্থাপনারই ফল ৪ জুনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড এবং বিস্ফোরণ। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রাণ গেছে ৪৯ জনের, দগ্ধ হয়েছে শতাধিক।
/এম ই
Leave a reply