আখাউড়া প্রতিনিধি:
বাংলাদেশে তিন বছর নয় মাস কারাভোগের পর দেশে ফিরে গেলেন দিলীপ সরকার (২৫) নামে এক ভারতীয় নাগরিক।
বুধবার (১৫ জুন) দুপুর সোয়া ১টার দিকে আখাউড়া চেকপোস্ট সীমান্ত পথে আগরতলা পূর্ব ত্রিপুরা থানা পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় মুক্তিপ্রাপ্ত দিলীপ সরকারের স্বজন, আখাউড়া- আগরতলা ইমিগ্রেশন পুলিশ ছাড়াও আখাউড়া থানা পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) জওয়ানরা উপস্থিত ছিলেন।
দেশে ফিরে যাওয়া ভারতীয় নাগরিক দিলীপ সরকার ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর যুগেন্দ্রনগরের আড়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা জগদীশ সরকারের (৫৮) ছেলে। বাংলাদেশ – ভারত দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের নির্দেশে বুধবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগার থেকে ছাড়া পান দিলীপ।
আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পুলিশের ইনচার্জ মোর্শেদুল হক যমুনা নিউজকে জানান, ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দিলীপ সরকার হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার ধর্মনগর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। এ সময় তার কাছে কোনো পাসপোর্ট বা ভিসা না থাকায় টহলরত বিজিবি জওয়ানরা তাকে আটক করে তার বিরূদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা দেয়। পরে হবিগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। দীর্ঘ তিন বছর ৯ মাস সাজাভোগ করেন দিলীপ।
গত ১৮ মে হবিগঞ্জ কারাগার থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে আনা হয় দিলীপ সরকারকে। দু’দেশের আইনি প্রক্রিয়া শেষে বুধবার দুপুর সোয়া ১টায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা পূর্ব থানা পুলিশের কাছে দিলীপ সরকারকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আগরতলা পূর্ব থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সিদ্ধান্ত দেব যমুনা নিউজকে জানান, অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে দিলীপ সরকার বাংলাদেশে আটক ছিলেন। বুধবার দুপুরে তাকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে দিলীপ কে তার পরিবারের কাছে তুলে দেয়া হবে।
মুক্তিপ্রাপ্ত দিলীপ সরকার বলেন, ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর আমি সীমানা ভুলে শিবনা বর্মকুণ্ডু সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ি। এ সময় বিজিবি আমাকে আটক করে জেলে দেয়। ভুলের খেসারত হিসাবে আমি তিন বছর ৯ মাস কারাভোগ করি। এখন এতদিন পর পরিবারকে কাছে পেয়ে আমি খুশি, আমার খুব ভাল লাগছে।
দিলীপ সরকারের বাবা জগদীশ সরকার ও তার মা সোমা সরকার আখাউড়া সীমান্তের শূন্যরেখায় অশ্রুসিক্ত নয়নে যমুনা নিউজকে বলেন, অনেকদিন চেষ্টার পর ছেলেকে কারামুক্ত করতে পেরেছি, এজন্য আমরা আনন্দিত। ঘরের ছেলে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে এসেছে, এখন ভাল লাগছে। আরও তাড়াতাড়ি ফেরাতে পারলে আরও ভাল লাগত। তবুও আমরা দু’দেশের সংশ্লিষ্টদের প্রতি সন্তষ্ট হয়েছি, আমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি।
/এসএইচ
Leave a reply