অর্থনৈতিক সঙ্কটে শ্রীলঙ্কা, দেশ ছাড়তে চান লাখ লাখ নাগরিক

|

ছবি: সংগৃহীত

অর্থনৈতিক সঙ্কটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কা ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমাতে চান লাখ লাখ নাগরিক। তাই পাসপোর্ট করার হিড়িক পড়েছে দেশটিতে। গতবারের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ৫ মাসেই ৩ গুণ বেশি পাসপোর্ট ইস্যু হয়েছে। প্রতিদিন নতুন আবেদন জমা পড়ছে কমপক্ষে ৩ হাজার। অতিরিক্ত চাপ সামলাতে কর্মীদের কর্মঘণ্টা বাড়াতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ইন্ডিয়া টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে অর্থনৈতিক দুর্দশায় নাজেহাল জীবন। তাই চাকরি নিয়ে প্রবাসে যেতে চান বহু লঙ্কান। কেউ কেউ হতে চান অভিবাসী। এই হাজার হাজার মানুষের অপেক্ষা পাসপোর্টের জন্য।

পাসপোর্ট অফিস ছাড়িয়ে আবেদনকারীদের দীর্ঘ লাইন পৌঁছেছে সড়কে। তাও আবার একাধিক সারি। টানা দু’দিন, তিনদিন এমনকি চারদিন ধরে এখানেই তাঁবু খাটিয়ে অফিসের সামনেই আবাস গেড়েছেন অনেকে। উন্নত জীবনের আশায় বিদেশে পাড়ি জমাতে চান শ্রমিক থেকে ব্যবসায়ী, কৃষক থেকে সরকারি চাকরিজীবী, ছাত্র এমনকি গৃহিনীরাও।

লাইনে দাঁড়ানো একজন বলেন, তিনদিন ধরে লাইনে। ঘুম নেই, খাওয়া নেই। এখানেই আছি। দেশে জিনিসপত্রের এত দাম। চলতে পারছি না। কুয়েতে গৃহকর্মীর কাজে আবেদন করবো। কিছু ডলার কামাই করলে পরিবারেরও উপকার হবে, দেশেরও।

৭ দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সঙ্কটে শ্রীলঙ্কা। ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের দেশটিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে। কমেছে রাষ্ট্রীয় মুদ্রার মান। ৩৩ শতাংশের বেশি মূল্যস্ফীতিতে হাঁসফাস করছে মানুষ। খাদ্য, জ্বালানি, বিদ্যুৎ আর ওষুধ সংকটে দিশেহারা নাগরিকরা।

টেবিলে জমে আছে পাসপোর্টের স্তুপ। কাজের চাপে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মীরা। বেড়ে গেছে কর্মঘণ্টা। বাতিল হয়েছে সাপ্তাহিক ছুটিও। জোরদার করা হয়েছে কার্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

ইমিগ্রেশন এন্ড এমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের কন্ট্রোলার এইচ.পি. চন্দ্রলাল বলেন, চাহিদার কারণে এক মাস লেগে যাচ্ছে নতুন পাসপোর্ট ইস্যুতে। ভিড়ের কারণে আমাদের ওপর অনেক চাপ। কর্মীরা ছুটির দিনেও কাজ করছে। ঝুঁকিও বেড়েছে। মাঝেমাঝে সহিংস পরিস্থিতি পর্যন্ত তৈরি হয়।

২০২২ সালের প্রথম ৫ মাসে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৬৪৫টি নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করেছে শ্রীলঙ্কা। গত বছর একই সময় যে সংখ্যা ছিল ৯১ হাজার। আবেদনের সংখ্যা বেড়েছে আরও কয়েক গুণ।

/এনএএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply