এবার ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ালো রাশিয়া

|

ইউক্রেন সংকটের মাঝেই এবার নতুন দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে রাশিয়া। ন্যাটোর সদস্য দেশ লিথুয়ানিয়ার অভ্যন্তরে রুশ ভূখণ্ড কালিনিনগ্রাদকে ঘিরেই এই বিবাদ। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

কালিনিনগ্রাদে রেলপথে পণ্য পরিবহনে বাধা দেয়ায় ক্ষুব্ধ মস্কোর হুমকি, কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে লিথুয়ানিয়াকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দখলে নেয়া কালিনিনগ্রাদে পণ্য পাঠাতে রাশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট লিথুয়ানিয়া। কিন্তু দেশটি বলছে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা থাকায় পণ্য যেতে দেবে না তারা।

রুশ ফেডারেশনের অংশ হলেও কালিনিনগ্রাদ মূলত লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ড সীমান্তের মাঝে অবস্থিত একটি ভূখন্ড। আর সেখানে পণ্য পরিবহনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট ইইউ’র সদস্য দেশ লিথুয়ানিয়া। ইউক্রেন আগ্রাসনের জেরে সম্প্রতি কয়লা, ধাতব পদার্থ, নির্মাণ সামগ্রী ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটি। এরপরই দেখা দেয় উত্তেজনা।

লিথুয়ানিয়ার এমন সিদ্ধান্তকে নজিরবিহীন ও আন্তর্জাতিক চুক্তির লঙ্ঘন আখ্যা দিয়েছে মস্কো। এর চরম মূল্য দিতে হবে বলেও কঠোর হুঁশিয়ারি পুতিন প্রশাসনের।

রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারি নিকোলাই পাতরুশেভ বলেন, পশ্চিমাদের এমন শক্রুতাপূর্ণ আচরণের উপযুক্ত জবাব দেবে রাশিয়া। শিগগিরই যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে। এর পরিণতি হবে গুরুতর। লিথুয়ানিয়ার জনগণকে এর ফল ভুগতে হবে।

লিথুয়ানিয়ার দাবি, স্বপ্রনোদিতভাবে নয়, বরং ইউরোপীয় কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছে তারা। সদস্য দেশ হিসেবে কেবলমাত্র ইইউ’র আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করছে প্রশাসন।

লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাবিয়েলুস ল্যান্ডসবেরগিস বলেন, ইউরোপীয়ান কমিশনের সাথে আলোচনা করে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এমন কোনো পণ্য লিথুয়ানিয়া দিয়ে পরিবহন করতে দেয়া হবে না।

কালিনিনগ্রাদ সরকারের কর্মকর্তা দিমিত্রি লিৎস্কভ বলেন, আমার এখনও মনে হয় প্রতিবেশিরা এমন ভুল সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে। অন্য নিষেধাজ্ঞার মতো এই পদক্ষেপও লিথুয়ানিয়ার অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। কালিনিনগ্রাদের এই পরিবহন খাতের মাধ্যমে তারাও যে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হন, সেটা ভুলে গেলে চলবে না। যদি নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়, তাহলে নৌপথের মাধ্যমে আমরা বিকল্প চিন্তা করবো।

এদিকে, পণ্য পরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্তে ভীতি ছড়িয়েছে কালিনিনগ্রাদের ৫ লাখ বাসিন্দার মাঝে। তারা জানিয়েছেন, এতে বিরূপ প্রভাব পড়বে তাদের জীবনযাত্রায়। বেড়ে যাবে জিনিসপত্রের দাম। নির্মাণকাজ, উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। অনেকে চাকরিও হারাতে পারেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে প্রায় ৭ শতাব্দী জার্মানির অধীনে ছিল কালিনিনগ্রাদ। ১৯৪৫ সালে বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে অঞ্চলটির দখল নেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন। এরপর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙলেও অঞ্চলটিকে এখনও নিজেদের অধীনে রেখেছে রাশিয়া। ইইউ ও ন্যাটো সদস্য পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া ভূখণ্ডের মাঝে অবস্থিত হওয়ায় কৌশলগতভাবে একে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে মস্কো।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply