অনলাইনে পশুর হাট: বড় হচ্ছে বাজার

|

হাটের গণ্ডি পেরিয়ে গরু-খাসির দেখা মিলছে মাউসের এক ক্লিকে। তাই গত কয়েক বছরে বদলে গেছে পশুর হাটের চিরচেনা দৃশ্য। সামনাসামনি দেখার পরিবর্তে ওয়েবসাইট কিংবা ফেসবুক পেজে পশুর ছবি-ভিডিও দেখছেন ক্রেতা। পশু কেনার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাৎক্ষণিক; আর তাদের সেবা দিচ্ছেন একঝাঁক স্মার্ট কর্মী।

অনলাইন মার্কেটপ্লেসে দৈনিক বিকিকিনি হচ্ছে কোটি টাকার বেশি। উদ্যোক্তারা বলছেন, অনলাইনে বেচাকেনা এখনও লাভজনক না। তবে ক্রেতাদের আস্থা বাড়লে আগামীতে কোরবানির জন্য পশু হাটের বিকল্প হবে অনলাইন মার্কেটপ্লেস।

সরকারের লক্ষ্য, প্রতি বছর অন্তত ২৫ শতাংশ পশু অনলাইনে বিক্রি করা। ২০২১ সালের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই বছর অনলাইনে পশু বিক্রিতে হাতবদল হয়েছে অন্তত ১২ শ’ কোটি টাকা। আর বেচাকেনা হয়েছে কমপক্ষে দেড় থেকে দুই লাখ পশু।

অনলাইন মার্কেটপ্লেস নিয়ে বেশি আগ্রহ তরুণদের। নিজস্ব উদ্যোগে তো বটেই, সরকারের ডিজিটাল হাট ইকোসিস্টেমকেও কাজে লাগাচ্ছে তারা।

বিভিন্ন এলাকার ৭০ জন খামারিকে এক করেছে আইসিটি বিভাগ। শুধু পশু বেচাকেনা নয়, কোরবানি ও মাংস প্রক্রিয়াজাতসহ হোম ডেলিভারিও দেবেন তারা। এসব সেবা কোনো প্রতিষ্ঠান আবার ফ্রি দিচ্ছেন, আবার কমবেশি ২০ শতাংশ সেবা নিচ্ছেন অনেকে। অনলাইনে বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ গরু আসে দেশের নানা প্রান্ত থেকে। আবার বিদেশি অনেক জাতের ব্রিড হচ্ছে বাংলাদেশেই।

বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন বলেন, গ্রাহকদের জন্য সেবা, শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখা— এই পুরো কার্যক্রম সফলভাবে তৈরি করা নিয়ে আমরা চিন্তিত। আমরা এখন লাভ নিয়ে চিন্তত না। সেবা যদি ভালো হয়, কয়েক বছরের মধ্যে লাভ করা যাবে।

কোরবানি পশু বেচাকেনায় নাম লিখিয়েছে করপোরেট বেনিয়ারাও। তাদের নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে পশুর চাহিদা জানাচ্ছেন ক্রেতারা। কোভিডের সংক্রমণ বাড়ায় সাড়াও মিলছে বেশ। সেসব প্ল্যাটফর্মে ছবি-ভিডিও তো আছেই। সাথে গরু কিংবা খাসি কোন প্রক্রিয়ায় প্রসেস করা হবে, কী ওষুধ বা খাবার ব্যবহার হয়েছে, জীবিত প্রাণীর ওজন কত, সব তথ্য দেয়া হচ্ছে ওয়েবসাইটে।

করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো মনে করছেন ডিজিটাল হাটের তদারকি হওয়া দরকার। এ প্রসঙ্গে বেঙ্গল মিটের কোরবানি প্রকল্প সমন্বয়কারী নূর মোহাম্মদ বলেন, অনলাইনে মাধ্যমে বিকিকিনিতে তদারকি ব্যবস্থা থাকা দরকার। ভোক্তা অধিকার ও খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের এটি তদারকি করার সুযোগ আছে। কেউ যদি প্রতারণার শিকার হন, তাহলে ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ করা উচিত।

উল্লেখ্য, দেশের প্রতি বছর কোরবানির ঈদে ৯৮ লাখ পশুর চাহিদা থাকে।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply