সমন্বিত পরিকল্পনার অভাবে একই তিমিরে জেলেদের জীবন। বছরের দীর্ঘ একটা সময় থাকে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা। তখন সরকারি সহায়তা দেয়া হলেও তা থেকে বঞ্চিত হয় অনেক জেলে। পিছিয়ে পড়া বিরাট এই জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে নেই নিদিষ্ট কোনো প্রকল্প। এতে উপকূলীয় এলাকায় জেলেদের মধ্যে বাড়ছে দারিদ্র্যতা।
দেশে বছরে মাছের উৎপাদন হয় প্রায় ৫০ লাখ টন। ১৬ বছরে দেশে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে মাছের উৎপাদন। ২ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই খাতে সম্পৃক্ত। তবে, মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা জেলেদের জীবন মানের তেমন উন্নতি হয়নি। ধরা যাক উপকূলীয় এলাকা কক্সবাজারের মহেশখালীর কথা। নানাবিধ সংকটে আছে এলাকার প্রায় ২০ হাজার জেলে। এরকম কথাই বললেন একজন জেলে। তিনি জানান, দেড় লাখ টাকার মাছ ধরার পরও হাতে আসে কেবল এক-দেড় হাজার টাকা। তাতে সংসার চলে না। উদ্যোগ নিয়ে যদি কিছু ঋণের ব্যবস্থা করে দিলে ছোটখাটো ব্যবসা করে সংসার চালানো যেতো।
উপকূলীয় অঞ্চলে দারিদ্র্যের হার বেশি। সেখানে বছরের দীর্ঘ সময় জেলেদের কাজ থাকে না। তাদের জন্য টেকশই সহায়তা কর্মসূচী দরকার। জেলেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝড় তুফান ও বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা সমুদ্রে মাছ শিকার করেন। কিন্তু তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয় না। জেলেরা জানান, জায়গা-জমি বন্ধক দিয়ে, স্বর্ণ বন্ধক দিয়ে মহাজনের কাছ থেকে যে টাকা তারা নিচ্ছেন, সাগরে মাছ ধরেও তা ফেরত দেয়ার অবস্থা তৈরি হয় না।
মৎস্য খাতে সম্পৃক্ত মানুষদের জীবন মান উন্নয়নে নানামুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, মৎস্যজীবী হিসেবে যারা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়, মাছ নিয়ে আসে তারা যেন নিরাপত্তাহীন অবস্থায় না পড়ে; সে লক্ষ্যে আমরা তাদের আধুনিক যান্ত্রিক ব্যবস্থাপনার আওতায় নিয়ে আসছি। জেলেদের যে সহায়তা করছি তা যদি কেউ আত্মসাৎ করে তবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়, গ্রেফতার করে জেলে প্রেরণ করা হয়। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমেও বিচার নিশ্চিত করা হয়।
/এম ই
Leave a reply