ব্যাগে ইয়াবা রেখে নারীকে ফাঁসাতে গিয়ে আটক মাদক সম্রাট হালিম

|

হিলি প্রতিনিধি:

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মাদক দিয়ে অসহায় এক নারীকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজের জালে নিজেই ধারা পড়লেন হালিম নামে এলাকার এক কুখ্যাত মাদক কারবারি। আটক মাদক কারবারি হালিম (৫০) উপজেলার দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামের মৃত বছির উদ্দিন ওরফে বসু’র ছেলে।

ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির জানান, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক হালিম ঘটনা স্বীকার করায় রোববার দুপুরে তাকে দিনাজপুর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে।

হালিম মিয়া দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় মাদকের পুরো সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে। তবে এই মাদক সম্রাট বেশ চতুর হওয়ায় তার বিরুদ্ধে নেই কোনো মামলা। অবশেষে নিজের পাতানো ফাঁদে এক অসহায় নারীকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই আটকা পড়েছেন পুলিশের জালে।

থানার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভেলাইন গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে মাদক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমের (৩৮) সাথে গত ৮ বছর আগে পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার হোসনে আরা (২৮) নামে এক নারীর বিয়ে হয়। ৩ বছর সংসার করার পর জাহাঙ্গীর একতরফাভাবে স্ত্রী হোসনে আরাকে তালাক দেয়। তালাক দেয়াকে কেন্দ্র করে স্ত্রী হোসনে আরা স্বামী জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জনের কাছে অভিযোগ দেয় এবং মামলা করার প্রস্তুতি নেয়। এই মামলা থেকে বাঁচতে জাহাঙ্গীর এবং তার মাদক ব্যবসায়ী বন্ধু হালিম, করিম এবং করিমের স্ত্রী দু’জনের মধ্যে আপোষ মীমাংসা করে দেয়ার জন্য মুঠোফোনে কল করে গত শুক্রবার (২৯ জুলাই) বিকেলে ঢাকা থেকে হোসনে আরাকে ঘোড়াঘাটে নিয়ে আসে।

এ সময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উভয় পক্ষ মাদক ব্যবসায়ী করিমের বাড়িতে আলোচনায় বসে। এই ফাঁকে মাদক ব্যবসায়ী হালিম গ্রুপের সদস্যরা কৌশলে হোসনে আরার ভ্যানিটি ব্যাগে ৪০ পিস ইয়াবা রেখে দেয় এবং হালিম থানায় ফোন করে পুলিশকে জানায় করিমের বাড়িতে ইয়াবা ব্যবসায়ী অবস্থান করছে।

ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ হালিমের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ওইদিন সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে হোসনে আরাকে ইয়াবাসহ আটক করে। পরে হোসনে আরা নির্দেশ বলে পুলিশের কাছে কান্নাকাটি করে এবং পুরো ঘটনার বিবরণ দেয়। ঘটনা শুনে পুলিশ অধিক তদন্ত শুরু করে। পরে হোসনে আরাকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর বিষয়টি প্রমাণিত হয়। পরে পুলিশ বাদী হয়ে জাহাঙ্গীরকে প্রধান আসামি করে হালিম, করিম ও করিমের স্ত্রী ছালমা বেগমের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করে।

পুলিশ জানায়, তারা সকলে মাদক সম্রাট হালিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে দীর্ঘদিন থেকে মাদকের বিশাল সিন্ডিকেট পরিচালনা করে আসছে। অবশেষে গত শনিবার রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে মাদক সম্রাট হালিমকে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ আটক করে।

ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির বলেন, মাদক সম্রাট হালিম এবং তার সহযোগীরা খুব কৌশলে ওই নারীকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে ফাঁসাতে চেয়েছিল। তবে আমাদের তদন্তে ঘটনার সত্যতা বেড়িয়ে এসেছে। গ্রেফতার হালিম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুরো ঘটনা স্বীকার করেছে।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply