অসুস্থ মা একা থাকলে কষ্ট পাবেন, তাই ক্লাসেই নিয়ে এলেন

|

ছাত্ররা লেকচার শুনছে, পাশেই একজন প্রবীণ মহিলা কখনও ঘুমুচ্ছেন, কখনও লেকচার শুনছেন। ছাত্ররা মনে করলেন তিনি হয়তোবা কোন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। কোনো কারণে এসে বসেছেন। কিছুক্ষণ পরে জানা গেলো বৃদ্ধি মহিলা হলেন ক্লাস নেয়া শিক্ষকেরই মা।

শিক্ষক হু মিঙ তার মাকে বাসায় একা না রেখে  ক্লাসে নিয়ে এসেছেন। ৮০ বছরের বৃদ্ধ মহিলা আলজেইমার রোগে আক্রান্ত। আস্তে আস্তে অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছে। ছেলে চান না অসুস্থ মা’কে এক মুহূর্তের জন্যও চোখের আড়ালে রাখতে। তাই বাসায় কাজের মেয়ের কাছে না রেখে নিজের গাড়িতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে এসেছেন।

ঘটনাটি চীনের দক্ষিণ-পশ্চিম গুইজহো প্রদেশের। অধ্যাপক হু মিঙ ২০১৬ সাল থেকে মাকে এভাবে ক্লাসে নিয়ে আসলেও সম্প্রতি চীনের জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম সিনা ওইবো’তে ভাইরাল হয় এ সংক্রান্ত ছবি। এরপর চীনা মিডিয়াও খবর প্রচার করেছে মায়ের প্রতি ছেলের আন্তরিকতার এই উদাহরণ নিয়ে।

সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমের কল্যাণে অধ্যাপক হু মিঙ’কে এখন আদর্শ মানছেন অনেক তরুণ-তরুণী। রীতিমতো তারকা খ্যাতিও জুটেছে তার।

অধ্যাপক হু মিঙ এর বাবা ২০১১ সালে মারা যান। তার একটি বোন থাকলেও তার মায়ের দেখাশুনা তাকেই করতে হয়। কারণ, স্মৃতিশক্তি বিলোপ হতে থাকা মা একমাত্র মিঙ’কেই চিনতে পারেন।

মিঙ বলেন, আলজেইমার রোগে মায়ের অবস্থা এতো খারাপ যে, তিনি কি খাচ্ছেন তাও বুঝতে পারেন না।  ক্লাসে নিয়ে আসায় তার দেখভাল করা মিঙের জন্য সহজ হয়েছে। সেখানে বসে কখনও ঘুমান, কখনও লেকচার শুনেন। কাউকে বিরক্ত করেন না।
ছাত্ররাও তাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। মায়ের সেবায় একজন আয়া কেনো নিচ্ছেন না এরকম প্রশ্নে অধ্যাপক বলেন, মায়ের সেবা করার বিষয়ে কোন ছাড় নয়, নিজেই সেবা করতে চাই।

সিনা ওইবোতে খুব সাড়া ফেলে। এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট এক লাখ লাইক, ৯ হাজার কমেন্ট ও ৭ হাজার বার শেয়ার করা হয়। একজন ব্যবহারকারী কমেন্টে লিখেছেন- অধ্যাপক হু মিঙ মায়ের সেবা কিভাবে করতে তার মডেল। অন্য আরো একজন লিখেছেন, আমি মনে করি ছাত্রদের জন্য এটাই সবচেয়ে ভাল শিক্ষা। এটা একটি দায়িত্ববান সন্তানের দৃষ্টান্ত।

এক রিপোর্টে দেখা গেছে পৃথিবীর অন্য দেশের থেকে চীনে আলজেইমার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি।

টিবিজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply