সংকটাপন্ন প্রকাশনা শিল্প, বাড়তে পারে বইয়ের দাম

|

এখনও করোনার ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি দেশের প্রকাশনা শিল্প। কাগজ, কালিসহ প্রকাশনা সামগ্রীর ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। দাম সমন্বয় করতে বইয়ের দামও বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতির অজুহাতে আমদানি করা কাগজের দাম বাড়িয়ে একটি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে মুনাফা লুটে নেয়ার অভিযোগও আছে ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত ৬ মাসে কাগজের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। কালির দাম বেড়েছে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত। ফলে শ্রমিকরা মজুরি বাড়ানোর জন্যে চাপ দিচ্ছে। এ অবস্থায় ব্যবসা ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের।

ক্ষোভ জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ মুদ্রণ শিল্প সমিতির কোষাধ্যক্ষ গাজী আলাউদ্দিন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে কাগজ ও কালির দাম ওঠানামা করছে। কিন্তু আমরা র-ম্যাটেরিয়াল কিনে সেই দাম ওঠাতে পারছি না।

সমিতির সদ্স্য সচিব আমিন খাঁন বলেন, আগে এক কার্টন কালির দাম ছিল ৭ হাজার টাকা। এখন সেই দাম ১৩ থেকে সাড়ে ১৩ হাজার টাকা। অনেক প্রেস ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদেরও ব্যবসা চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এদিকে, বইয়ের প্রচ্ছদ বাঁধাইয়ের বোর্ডের দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ। বই প্রকাশনার সার্বিক খরচও বাড়ছে। এ অবস্থায় বই এর দাম বাড়ানোর আভাস দিয়ে প্রকাশক আলমগীর মল্লিক বলেন, বইয়ের দাম বাড়ার আর কোনো বিকল্প এখন নেই। কারণ আমি ২ হাজার টাকা রিম যে কাগজটা কিনেছি, সেটা এখন হয়ে গেছে ৩ হাজার টাকা।

তবে এই দাম বাড়ার পেছনে সিন্ডিকেটের হাত আছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রিন্টিং অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। তাদের দাবি, বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে গত কয়েক মাসে চারবার দাম বাড়ানো হয়েছে। নতুন বছরে বইয়ের পাশাপাশি ক্যালেন্ডার ও ডায়েরির দামও বাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন প্রিন্টিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, এর থেকে পরিত্রাণের উপায় হলো, সরকারকে ত্রিপক্ষীয় বা চতুর্পক্ষীয় হোক সবাইকে নিয়ে বসতে হবে। পেপার মিল নিয়ে বসতে হবে, এমপিআর চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এবং আমরা যারা অ্যাসোসিয়েশন আছি আমাদের নিয়ে একসাথে বসতে হবে। সেখানে যে যার সমস্যাটা তুলে ধরলে সরকার বুঝতে পারবে কাকে কোথায় ছাড় দিলে এ সমস্যার সমাধান হবে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply