টাঙ্গাইলে পুলিশি হেফাজতে হাজতির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

|

স্টাফ করেসপনডেন্ট, টাঙ্গাইল:

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়িতে আটককৃত লেবু মিয়া (৫৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের দাবি, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন লেবু মিয়া। এ ঘটনায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়িতে এই ঘটনা ঘটে। লেবু মিয়া বাঁশতৈল গ্রামের বাহার উদ্দিনের ছেলে। সোমবার ওই গ্রামের মফিজুর রহমানের সাবেক স্ত্রী সখিনা আক্তার (৪২) হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মফিজুর রহমান ও লেবু মিয়াকে আটক করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, পাঁচ বছর আগে স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয় সখিনা আক্তারের। তার দুই মেয়ের বিয়ে হওয়ায় এবং ছেলে বিদেশ থাকায় ছেলের বউ নিয়ে তিনি থাকতেন তিনি। এরই মধ্যে ছেলের বউ বাবার বাড়িতে যাওয়ায় গত রোববার রাতে সখিনা আক্তার বাড়িতে একাই ছিলেন। রাতের কোনো এক সময় কে বা কারা সখিনাকে তার বাড়িতে ঢুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। খবর পেয়ে সোমবার বেলা ১২টার দিকে বাঁশতৈল ফাঁড়ি পুলিশ সখিনার মরদেহ উদ্ধার করে।

তখন এই ঘটনায় পুলিশ সখিনার সাবেক স্বামী মফিজুর রহমান ও কথিত পরকীয়া প্রেমিক লেবু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। রাতে আটককৃত দুজনকে পুলিশ ফাঁড়ির হাজতখানায় রাখা হয়। তবে রাতের কোনো এক সময় লেবু মিয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

বাঁশতৈল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মনিরুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে পুলিশ ফাঁড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে লেবু মিয়ার গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় তাকে দেখতে পাই।

এদিকে, পুলিশ হেফাজতে লেবু মিয়ার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দুপুর দুইটায় গোড়াই ও সখিপুর সড়কে রাস্তা বন্ধ করে টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ করে এলাকাবাসী।

লেবু মিয়ার স্ত্রী আলেয়া বেগম জানায়, পুলিশ আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর সকালে দেখা যায় হাজতখানায় লাইলনের দড়িতে ঝুলে আছে লেবু মিয়ার মরদেহ। পরে পরিবারকে না জানিয়ে পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। এখনো তারা লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। তার দাবি পুলিশ হেফাজতে হত্যা করা হয়েছে তাকে।

এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, বিষয়টি মর্মান্তিক। তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরই আসলে বোঝা যাবে তার মৃত্যুটা কীভাবে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু ঘটনা স্পর্শকাতর, তাই ঘটনা তদন্তপূর্বক সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply