বিভ্রান্তিতে দাখিল পরীক্ষা দিতে পারেননি লক্ষ্মীপুরের ৭ মাদরাসা শিক্ষার্থী

|

বিভ্রান্তিতে পরীক্ষায় অংশ না নিতে পারা ৭ শিক্ষার্থী।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

লক্ষ্মীপুরে বিভ্রান্তিতে পড়ে দাখিল পরীক্ষা দিতে পারেননি ৭ মাদরাসা শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পরীক্ষা থাকা না থাকার বিভ্রান্তিতে পড়ে লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে জীববিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা দিতে পারেননি ওই ৭ দাখিল পরীক্ষার্থী। উপজেলার চর আবদুল্যাহ ফাজিল (ডিগ্রী) মাদরাসার এ সাত শিক্ষার্থী পরীক্ষা হলে অনুপস্থিত থাকায় হল কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করলে ৯ শিক্ষার্থীর ২ জন পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট পর কেন্দ্রে উপস্থিত হন। বাকিরা যথাসময়ে উপস্থিত হতে না পারায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারা শিক্ষাথীরা হলেন- জিয়া উদ্দিন, আকিব হোসেন, তাজরিন জাহান, আরমান হোসেন, রুমানা আক্তার, শরীফুল ইসলাম ও নুশরাত জাহান ইতি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে (একাডেমিক সুপারভাইজার) তাৎক্ষনিক উপস্থিত হয়ে অভিযোগ করেন। পরীক্ষা না দিতে পারায় সেখানে শিক্ষার্থী ও অভিভাকদের কান্নায় এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

পরীক্ষার্থীরা জানান, চর আবদুল্লাহ ফাজিল মাদরাসার বিজ্ঞান বিভাগের ৯ শিক্ষার্থী অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে কৃষিশিক্ষা বিষয়টি পাঠ্য হিসেবে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও আমাদের প্রবেশপত্রে জীববিজ্ঞান বিষয়টি এসেছে। প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের জানানো হয় যে, জীববিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা হবে না। এ কারণে আমাদের নিয়মিত ক্লাসও হয়নি। এজন্য আমাদের নবম-দশম শ্রেণীর দুই বছরে একদিনও জীববিজ্ঞানের ক্লাস করাননি কোনো শিক্ষক। স্যাররা বলেছেন- জীববিজ্ঞান পরীক্ষা হবে না। আমরাও স্যারের কথামতো জীববিজ্ঞান পড়ি নাই। এছাড়াও প্রাক-নির্বাচনী ও নির্বাচনী পরীক্ষায়ও জীববিজ্ঞানের পরীক্ষা নেয়া হয়নি। অ্যাডমিট কার্ডে জীববিজ্ঞান আসার বিষয়টি আমরা স্যারদের অবগত করলে, বিজ্ঞান শিক্ষক রবিশঙ্কর স্যার ও অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আবদুল হাকিম স্যার জানিয়েছেন- জীববিজ্ঞান পরীক্ষা হবেনা। এমনকি আজও স্যাররা আমাদের জানিয়েছেন পরীক্ষা হবে না। অন্যদিকে, সকাল ১১টায় হল থেকে স্যারেরা আমাদের পরীক্ষা আছে বলে ফোনে জানান। তড়িঘড়ি করে কেন্দ্রে আসতে ২০-২৫মিনিট মতো সময় লেগে যায়।

অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা আরও জানান, পরীক্ষা শুরুর সময় ১১টা হলেও আমরা ১১টা ২০মিনিটে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করলে কেন্দ্র সচিবসহ অন্যান্যরা আমাদের হল থেকে বের করে দেন।

ওই কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব ও আলেকজান্ডার কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা তৈয়ব আলী জানান, পরীক্ষা শুরুর পর অনুপস্থিতি দেখে আমি যোগাযোগ করি। এরপর ৯ পরীক্ষার্থীর ২ জন পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট পর উপস্থিত হলে আমরা তাদের পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করি। বাকি সাত শিক্ষার্থী পরীক্ষার আধা ঘণ্টা পর আসায় তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চর আবদুল্যাহ ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আবদুল হাকিম এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। ওই পরীক্ষার্থীদের জন্য আমার খুবই খারাপ লাগছে। পাবলিক পরীক্ষা সংক্রান্ত নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হতে না পারায় কেন্দ্র সচিব তাদেরকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে পারেননি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। আমি তাদের অবশিষ্ট্য পরীক্ষাগুলোয় অংশগ্রহণের জন্য বলেছি। আর আজকের পরীক্ষার ব্যাপারে আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জানাবো। চেষ্টা করবো যেনো শিক্ষার্থীদের প্রতি সুদৃষ্টি দেয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply