সিরাজগঞ্জে দুই শিশুসহ গৃহবধূ খুন; ভাগনির বাসায় চুরি করে কিস্তি শোধ করতে চেয়েছিল খুনি

|

সিনিয়র রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ:

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ২ সন্তানসহ গৃহবধূ রওশন আরাকে হত্যার মামলায় ওই গৃহবধূর সৎ মামাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল জানান, ট্রিপল মার্ডারের মূল আসামি আইয়ুব আলী সাগরকে গ্রেফতার করেছেন তারা।

গত ১ অক্টোবর বিকেলে বেলকুচি উপজেলার মবুপুর গ্রামের একটি বাড়ির তালাবদ্ধ ঘর থেকে রওশন আরা বেগম (৪০) এবং তার দুই সন্তান জিহাদ (১০) ও মাহিমের (৪) মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের তিনদিন আগে তাদের হত্যা করার ফলে লাশগুলো ফুলে দুর্গন্ধ বের হয়। ২ অক্টোবর নিহত রওশন আরার ভাই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে অজ্ঞতদের আসামি করে বেলকুচি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেদিনই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করতে মাঠে নামে পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা। মৃতদেহ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ট্রিপল মার্ডারের মূল আসামি আইয়ুব আলী সাগরকে গ্রেফতার করে তারা।

সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। গ্রেফতার সাগর পেশায় একজন তাঁত শ্রমিক। সীমিত আয়ে সংসার চালাতে না পেরে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন তিনি। একপর্যায়ে তার ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়ে। নিহত রওশন আরা সাগরের সৎ ভাগনি। প্রায়ই তিনি রওশনের বাসায় যাতায়াত করতেন।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর সাগর রওশনের কাছে কিছু টাকা ধার চান। টাকা না পেয়ে তিনি ওই বাড়িতে চুরি করার সিদ্ধান্ত নেন। ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সাগর আবার রওশন আরার বাড়িতে যান। রাতে খাবার খেয়ে তাদের সাথে একই ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন সাগর। মাঝরাতে সে রওশনের আঁচল থেকে চাবি খুলে নিয়ে সিন্দুক হাতড়াতে থাকে। এক পর্যায়ে রওশনের ঘুম ভেঙে গেলে সাগর পাশে থাকা পাথর (শিল) দিয়ে রওশন আরার বুকে আঘাত করেন এবং পরে গলাপিটে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে আবার সিন্দুক হাতড়াতে শুরু করেন। এসময় রওশনের চার বছরের ছেলে মাহিন কান্না শুরু করলে সাগর তাকেও গলাটিপে হত্যা করেন। সবশেষে সে রওশনের বড় ছেলে জিহাদকেও গলাটিপে খুন করেন। এরপরও রওশনের ঘরে তিনি টাকা ও অলঙ্কার খুঁজতে থাকেন। শেষপর্যন্ত কিছুই না পেয়ে ফজরের পর তিনি দরজা বাইরে থেকে আটকে দিয়ে চলে যান।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাগরকে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply