সিরাজগঞ্জে পুলিশের গাড়ি থেকে মোবাইল, টাকা ও ওয়াকিটকি ছিনতাই

|

সিনিয়র রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ :

সিরাজগঞ্জের মহাসড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় বগুড়ার সোনাতলা থানা পুলিশের একটি টিমের কাছ থেকে ১টি ওয়াকিটকি, কিছু নগদ টাকা ও দু’টি মোবাইল ছিনতাই হয়েছে। দিনভর ছিনতাইয়ের বিষয়টি পুলিশ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলেও গনমাধ্যমে জানাজানি হলে পরে পুলিশ সত্যতা স্বীকার করেন।

বুধবার (১২ অক্টোবর) ভোরে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের সদর উপজেলার মুলিবাড়ি থেকে কড্ডা এলাকার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে বগুড়ার সোনাতলা থানার ওসি সৈকত হাসান জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে সোনাতলা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী অপহৃত হয়। ওই ঘটনায় ছাত্রীর বাবা আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে পুলিশ ও অপহৃতের পরিবার ওই ছাত্রীর সন্ধান করছিল। গত সোমবার ছাত্রীর পরিবার জানতে পারে মেয়েটি ঢাকায় অবস্থান করছে। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সোনাতলা থানা পুলিশ ঢাকায় উদ্ধার অভিযানে যায়। সোনাতলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল খালেক ও কনস্টেবল আবুল কালাম এই অভিযানে যান। এ সময় তাদের সাথে ছাত্রীর বাবা আব্দুর রশিদ ও চাচা শহীদুল ইসলাম ছিলেন। ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে রাতেই তারা সোনাতলার উদ্দেশে রওনা হন। তারা যমুনা সেতু পার হয়ে কড্ডার মোড়ের কাছাকাছি পৌঁছালে সড়কে পেছন থেকে তাদের মাইক্রোবাস লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় মাইক্রোবাসের গ্লাস ভেঙে পাথরটি ওই ছাত্রীর চাচা শহীদুলের মাথায় লাগে। তার চিৎকারে চালক গাড়ি থামালে ৭/৮ জনের একদল ছিনতাইকারী তাদের ঘিরে ধরে। এ সময় গাড়িতে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাদের পরিচয় দিলেও ছিনতাইকারীদল তা বিশ্বাস করেনি। তারা অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের কাছে থাকা নগদ টাকা, ১টি ওয়াকিটকি মোবাইল ফোন ও মালামাল লুট করতে গেলে কনস্টেবল কালাম তাদের বাধা দেন। এ সময় তার মাথায় ছুরিকাঘাত করে ছিনতাইকারীরা। লুট করে তারা চলে গেলে আহত কনস্টেবল ও ওই ছাত্রীর চাচাকে হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসা শেষে থানায় ফেরেন তারা।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি জানার পর বগুড়া থেকে ডিবি পুলিশ ও সোনাতলা থানা পুলিশ সিরাজগঞ্জে অভিযানে গেছে।

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনার পর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কামারখন্দ সার্কেল) আদনান মোস্তাফিজ নেতৃত্বে ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকায় অভিযান চলছে। তবে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধার হয়নি এবং ছিনতাইকারীরাও শনাক্ত হয়নি।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, রাতে মহাসড়কে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম থানার পুলিশের টহল থাকার কথা। এরপরও কীভাবে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলো। এতে কারও দায়িত্বে অবহেলা আছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধার ও অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

/এনএএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply