১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে আখ্যা দিতে মার্কিন পার্লামেন্টে প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই আইনপ্রণেতা স্টিভ শেবোট এবং রোহিত খান্না।
শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) এই দুই প্রভাবশালী কংগ্রেস সদস্যের উত্থাপিত ৮ পৃষ্ঠার প্রস্তাবনায় মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর নিপীড়নের বিষয়ে তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে বাঙালি এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যে নির্যাতন চালিয়েছে তা যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ। ওই ঘৃণ্য অপরাধ কোনোভাবেই ভুলে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে উল্লেখ করেন শেবোট। এসব অপরাধের জন্য বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও উল্লেখ করা হয়।
টুইটারে রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য স্টিভ শেবোট বলেন, আমাদের স্মৃতি থেকে এই গণহত্যার শিকার হওয়া লাখ লাখ মানুষের কথা মুছে যাওয়া কোনোভাবেই উচিত নয়। গণহত্যার স্বীকৃতি প্রদান ঐতিহাসিক রেকর্ডকে আরও সমৃদ্ধ করে, আমাদের সহকর্মী আমেরিকানদের আরও শিক্ষিত করে তোলে এবং অপরাধীদের জানতে দেয় যে এই ধরনের অপরাধ সহ্য করা হবে না বা, ভুলে যাওয়া হবে না।
ভারত-আমেরিকান আইনপ্রণেতা ডেমোক্র্যাট রোহিত খান্না এবং রিপাবলিকান স্টিভ শেবোট মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতিও আহ্বান জানান। আন্তর্জাতিক আইন মেনে গণহত্যায় জড়িতদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার কথাও বলা হয়। সেই সাথে প্রস্তাবনায় বলা হয়, এমন গণহত্যা সংঘটনের জন্য বাংলাদেশের প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত পাকিস্তানের।
স্টিভ শেবোট বলেন, অন্যান্য গণহত্যার মতোই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ, বর্তমান বাংলাদেশে সংঘটিত হয়েছিল পাকিস্তান কর্তৃক এক ঘৃণ্য মানবতাবিরোধী অপরাধ। গণহত্যার শিকার লাখ লাখ মানুষের বড় অংশই ছিল হিন্দু জনগোষ্ঠী। আমার মতে, এই অপরাধকে গণহত্যা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। এই স্বীকৃতি আদায়ের কাজই আমরা করছি।
দক্ষিণ এশিয়া, মধ্য এশিয়া ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ভূ-রাজনীতির পটপরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এই গণহত্যার স্বীকৃতি। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট এই দুই কংগ্রেসম্যানের প্রয়াসকে স্বাগত জানিয়েছে সেখানকার বাংলাদেশি সম্প্রদায়। ১৯৭১ সালে স্বজন হারানো সেলিম রেজা নুর বলেন, ৫১ বছর পর যেন মুক্তির স্বাদ পেলাম। আমাদের দেশে সংঘটিত গণহত্যা অবশেষে মার্কিন কংগ্রেসে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে।
/এম
Leave a reply