রুশ ড্রোন হামলায় বিধ্বস্ত ইউক্রেনের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা, অন্ধকারে লাখো ইউক্রেনীয়

|

ছবি: সংগৃহীত

এবার ইউক্রেনের জ্বালানী এবং বিদ্যুৎ সরবাহ কেন্দ্রগুলো লক্ষ্য করে হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। মাইকোলিভ, নিপ্রো, ঝাইতোমিরসহ ৫টি গুরুত্বপূর্ণ ইউক্রেনীয় শহরের পাওয়ার প্ল্যান্ট লক্ষ্য করে চলে একের পর এক ড্রোন ও মিসাইল হামলা। এতে, ধ্বংস হয়ে গেছে দেশটির বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থার ৩০ শতাংশ। অন্ধকারে এসব শহরের চার শতাধিক এলাকা। এ অবস্থায় রাশিয়া ও ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, উত্তেজনার মধ্যেই পারমাণবিক মহড়া শুরু করেছে ন্যাটো জোট।

কিয়েভবাসীর প্রতি মুহূর্ত এখন কাটছে ক্ষেপণাস্ত্র আর ড্রোন আতঙ্কে। দিন-রাতের কোনো সীমা-পরিসীমা নেই, রুশ হামলা চলছেই। শুধু সামরিক স্থাপনাই নয়, বাণিজ্যিক কিংবা আবাসিক, রুশ হামলা থেকে বাদ পড়ছে না কিছুই। ধ্বংস্তুপে পরিণত হচ্ছে একের পর এক আবাসিক এলাকা।

সোমবার (১৭ অক্টোবর) রাত থেকে রুশ হামলার মূল লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সরবরাহ কেন্দ্রগুলো। এরমধ্যে মাইকোলিভ, স্যামি, নিপ্রো এবং ঝাইতোমির শহরের পাওয়ার প্ল্যান্টে চলে ক্রমাগত রুশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। ফলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এসব শহরের সাড়ে চারশ এলাকা। প্রাণ বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটছেন এসব এলাকার বেসামরিক নাগরিকরা। এ পরিস্থিতির জন্য দুর্বল আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বলেন, বিশ্ববাসী দেখুক ড্রোন দিয়ে কীভাবে সন্ত্রাসী হামলা করছে রাশিয়া। প্রচলিত অস্ত্র দিয়েই এসব ড্রোন মোকাবেলা করছি আমরা। গত ১২ ঘণ্টায় ৩৭টি ইরানি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। আমাদের জন্য আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জরুরি হয়ে পড়েছে। পশ্চিমা বিশ্বের কাছে আহ্বান দ্রুত আমাদের এসব অস্ত্র সরবরাহ করুন।

ইউক্রেনে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাত্রা বাড়ানোয় রাশিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষোভ আর নিন্দার ঝড় উঠেছে বিশ্বজুড়ে। একদিকে হামলার জন্য রাশিয়াকে, অন্যদিকে ড্রোন সরবরাহের জন্য ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন পররাষ্ট্র মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল বলেন, রুশ-ইরানের এ অস্ত্র লেনদেনের বিষয়টি পুরো অঞ্চলকেই ঝুঁকিতে ফেলবে। গেলো জুলাই থেকেই আমরা বলে আসছি যে বিশাল পরিসরে ড্রোন উৎপাদন করছে ইরান। যার লক্ষ্য রাশিয়াকে সরবরাহ করা। ইরানের কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করছে রাশিয়া এ তথ্যও আমরা দিয়েছি। মস্কোকে এসব ড্রোন সরবরাহ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সনদের চূড়ান্ত লঙ্ঘন করেছে তেহরান।

রাশিয়ার হামলার আশঙ্কায় পরমাণু অস্ত্র এবং রণতরী নিয়ে সামরিক মহড়া শুরু করেছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। স্টেডফাস্ট নুন নামের এ মহড়ায়, পারমাণবিক হামলা ঠেকাতে সক্ষম এমন ৬০টি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছে বলে জানা গেছে। জার্মানি, বেলজিয়াম ও যুক্তরাজ্যের আকাশসীমায় চালানো এ মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের দূরপাল্লার বি-ফিফটি টু বোমারু বিমানসহ ৬০টি যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply