পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
জেলা পরিষদ নির্বাচনে হেরে ভোট কেনার টাকা ফেরত চাইলেন সংরক্ষিত বাউফল-দশমিনা উপজেলার নারী সংরক্ষিত সদস্য পদের প্রার্থী মোসা. রুবিনা আক্তার। এ ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে বাউফল উপজেলার বকুলতলা এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের কাছে টাকা ফেরত চাইতে যান পরাজিত প্রার্থী মোসা রুবিনা আক্তার। এসময় তারা ভিডিও করে সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেন।
ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে রুবিনা আক্তারকে বলতে শোনা যায়, আমি আমার সামর্থ্য অনুযায়ী ভোটারদের ২ হাজার করে টাকা দিয়েছি চা-নাস্তা ও ভোট কেন্দ্রে যাওয়া আসার খরচ হিসেবে। তারা টাকা নেয়ার সময় আমাকে আশ্বাস দিয়েছিল, আমাকে ভোট দেবেন। কিন্ত কেউ আমাকে ভোট দেয়নি। যারা আমাকে ভোট দেয়নি তারা অনেকেই আমাকে টাকা ফেরত দিয়েছে। তারা বলেছেন, আপা আপনি মন খারাপ কইরেন না। আমি অনেক কান্নাকাটি করেছি। কিন্তু এই মেম্বার (ইউপি সদস্য) আমাকে টাকা ফেরত দিচ্ছেন না, বরং অপমান করেছেন, ধাক্কা দিয়েছেন। আমার গাড়ির চাবিটাও নিয়ে গেছেন, দিচ্ছেন না। সে চরিত্রহীন বলে গালি দিয়েছেন এবং সাংবাদিক ডেকে ভিডিও করে ছড়িয়ে দেবেন বলে আমাকে হুমকিও দিয়েছেন ওই মেম্বার।
ভিডিওতে ওই ইউপি সদস্যকে দেখা না গেলেও তার কথা শোনা যায়। তিনি বলেছেন, মেম্বারেরা টাকা ফেরত দেয়ার পরে রুবিনা আক্তার মেম্বারদের দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন। এতে তার গাড়ির চাবি কেড়ে নেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভোটার জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটপ্রতি লাখ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। আর ওই প্রার্থী দিয়েছেন দুই হাজার টাকা। সে ভোট না পাওয়াই কথা।
এ ঘটনা নিয়ে কথা বলতে রুবিনা আক্তারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি। তবে তার স্বামী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ফেইসবুকে আমরা যা দেখছি অনেকসময় সত্যি হয় না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি তার স্ত্রী রুবিনা আক্তারের নয় বলেও দাবি করেন তিনি।
দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি আমি দেখেছি। নির্বাচনের দিন ওই প্রার্থীর সাথে (মোসা. রুবিনা আক্তার) আমার কথা হয়। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল আমিন জানান, নির্বাচনে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন অবৈধ। এ বিষয়ে যদি কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়। তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ১৭ অক্টোবর পটুয়াখালী জেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। বাউফল-দশমিনা উপজেলার নারী সংরক্ষিত সদস্য পদে দোয়াত কলম প্রতীকে কামরুন নাহার, হরিণ প্রতীকে পশারী রানী, টেবিলঘড়ি প্রতীকে মিসেস ফাতেমা আলম ও ফুটবল প্রতিকে মো. রুবিনা আক্তার প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এর মধ্যে দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে কামরুন নাহার ১৪৬ ভোট পেয়ে জয়ী হলে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হরিণ প্রতীকে পশারী রানী পেয়েছেন ১২০ ভোট। অপরদিকে ফুটবল প্রতীকে রুবিনা আক্তার ৩৬ ভোট পেলেও আরেক প্রার্থী মিসেস ফাতেমা আলম টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন শূন্য ভোট।
/এডব্লিউ
Leave a reply