নরসিংদীতে সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে বিদেশি ফল রাম্বুটান

|

ছবি : সংগৃহীত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, নরসিংদী:

বিদেশি ফল রাম্বুটান চাষে সফলতা পেয়েছেন নরসিংদীর শিবপুরের কৃষক জামাল উদ্দিন। তার এ সফলতা আশা জাগিয়েছে এলাকার অন্যান্য কৃষকদেরও। বাজারে ব্যাপক চাহিদা ও ভালো দাম পাওয়ায় সুস্বাদু ফল রাম্বুটান চাষে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন নরসিংদীর অন্য কৃষকরা।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, সবজি ও নানা ধরনের ফলের পাশাপাশি নরসিংদীতে এবার নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলতে যাচ্ছে রাম্বুটান।

স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় রাম্বুটান দেখতে অনেকটা লিচুর মতো। গায়ে কাটাযুক্ত বলে বাইরে থেকে দেখতে কিছুটা কদম ফুলের মতো। কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে লাল বা গোলাপি রঙ ধারণ করে। উপরের খোসা ফেলে দিয়ে ভেতরের অংশটা খেতে হয়।

রাম্বুটানের উৎসভূমি থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া অঞ্চলে। তবে ফলটি এখন নরসিংদীর বিস্তীর্ণ এলাকায় কৃষকদের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। একসময় লটকন ফল চাষে সফলতা পেয়েছিলেন এ অঞ্চলের চাষীরা।

শিবপুরের অষ্টআনী গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দিন জানিয়েছেন, ২০০৬ সালে ব্রুনাই থেকে দেশে ফেরার সময় সঙ্গে নিয়ে আসেন দুই কেজি রাম্বুটান ফল। খাওয়ার পর বাড়ির আঙিনায় বপণ করেন বীজ। চারা গজিয়ে ধীরে ধীরে বড় হয়। ৫ বছর পর অল্প কিছু ফল গাছে ধরলে আশার আলো দেখেন জামাল। অবসান হয় দীর্ঘ অপেক্ষার। পরের বছরগুলোতে ফলন বাড়তে থাকে। বর্তমানে তার ১০টি গাছ রয়েছে। যার মধ্যে ৩টিতে প্রতি বছর ফল আসে।

জামাল উদ্দিন বলেন, বর্তমানে বাগান থেকেই রাম্বুটান বিক্রি হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলের পাশাপাশি চারাও উৎপাদন করি। আঁকারভেদে প্রতিটি চারা ৩শ’ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অনলাইনে অর্ডার নিয়েও চারা বিক্রি করি।

কুরিয়ারের মাধ্যমে ফল ও চারা দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয় বলে জানান তিনি। স্বল্প খরচ, উপযোগী আবহাওয়া ও লাভজনক হওয়ায় বাগান সম্প্রসারিত করছেন এই কৃষক।

জামাল উদ্দিনের সফলতায় এলাকার অন্যান্য চাষীরাও আগ্রহ প্রকাশ করছেন রাম্বুটান চাষে। তারাও চারা সংগ্রহ করে গড়ে তুলছেন নতুন নতুন বাগান।

নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতেরর উপ-পরিচালক ড. ছাইদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাম্বুটানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলটি ব্যাপক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। নরসিংদীর মাটি এ ফল চাষের উপযোগী হওয়ায় সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। ইতোমধ্যে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আগামীতে এ ফল নরসিংদীর কৃষিতে বিপ্লব ঘটাবে বলেও প্রত্যাশা করেন এ কর্মকর্তা।

এএআর/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply