বৈচিত্র্য আর মানবিকতার বার্তা নিয়ে বিশ্বকাপের গ্যালারিতে উড়ছে ফিলিস্তিনের পতাকা

|

কাতার বিশ্বকাপে ফিলিস্তিন! মাঠে না খেললেও, আলোচনা-উদযাপন-গণমাধ্যমে নিপীড়িত এ ভূখণ্ডের উপস্থিতি স্পষ্ট। সাদা-সবুজ-লাল-কালো রঙের পতাকায় শোভিত স্টেডিয়াম। ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ শ্লোগানে মুখরিত কাতারের পথঘাট। শুধু, আরব বিশ্বের মুসলিমরাই নন; পুরো বিশ্ব থেকে আসা ফুটবলভক্তরা সংহতি জানাচ্ছেন ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষের প্রতি। ফিলিস্তিনের প্রতি এমন ঐক্য-সমর্থন দেখা যায় না সচরাচর।

দোহার পথে-ঘাটে এখন ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার দাবি। কিন্তু, স্থানটি ইসরায়েলের দখলকৃত কোনো ভূখণ্ড নয়। বরং, কাতারের স্টেডিয়ামের বাইরের বিজয়োল্লাস। শুধু, ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ নয়, বিশ্বের নানা প্রান্তের উদযাপনেই উঠে আসছে নিপীড়িত মুসলিমদের প্রতি সংহতি।

দোহার স্টেডিয়াম, ফ্যান জোন, রাস্তায় নামলেই দেখা যাবে দিলিস্তিনের সাদা-সবুজ-লাল-কালো রঙের পতাকাটি। এর সাথে সমর্থকদের ঘাড়ে বিশেষ স্কার্ফ- কাফিয়াহ্ , আর্মব্যান্ডসহ নানা প্রতীক। মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে কাতার বরাবরই ফিলিস্তিনের সমর্থক। তাই, ভৌগলিক-যৌক্তিক বা সাংস্কৃতিকভাবে কাতারে ফিলিস্তিন আন্দোলন পেয়েছে এক নতুন মাত্রা।

ভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনের পতাকা বহনে সাধারণত অনেকেই ইতস্ততবোধ করেন। তাও আবার ফুটবল বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে। কিন্তু, কাতারের আয়োজনে ফুটবল মাঠ, স্টেডিয়াম এমনকি গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার জোরালো দাবি।

সমর্থকরা অকপটে বলছেন, কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ উপভোগের জন্যেই এসেছিলাম। কিন্তু, ফিলিস্তিনের প্রতি এতোটা ভালোবাসা-সমর্থন পাবো- কল্পনাও করিনি। যে আয়োজনে আমরা অংশই নেইনি, সেদেশের পথে-পথে ফিলিস্তিনের গৌরবের পতাকা। এরথেকে সুন্দর দৃশ্য আর কি হতে পারে!

শুধু ফুটবলপ্রেমীরাই নন। ফিলিস্তিনের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে পিছিয়ে ছিলেন না, খেলোয়াড়রাও। ম্যাচ শেষে, জয়োল্লাসের সময় নিজ পতাকা পাশে রেখে ফিলিস্তিনের পতাকা কাঁধে তুলে নেন মরক্কোর ফুটবলাররা। তাতেই স্পষ্ট আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি তাদের বার্তা।

বিশ্বকাপ দেখতে আসা দর্শকরা বলছেন, এই যুগে খেলার সাথে রাজনীতি মেশানোর কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু, মতামত বা বাক-স্বাধীনতা তো প্রকাশ করতেই পারি। সে কারণেই, ফিলিস্তিনিদের প্রতি ঐক্য জানাচ্ছি। খেলা অবশ্যই গণমানুষের কাছে পৌঁছানোর সবচেয়ে বড় মাধ্যম। কারণ, পুরো বিশ্বকে এক সুতোয় গাঁথে ফুটবল বিশ্বকাপ। সে কারণেই, স্টেডিয়ামে ফিলিস্তিনের পতাকা-স্কার্ফ আনা।

আরেকজন ফুটবলপ্রেমী বললেন, ফুটবল বিশ্বকাপের মঞ্চে ফিলিস্তিনের পতাকা বহন বিশাল অর্থ বহন করে। স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিকে বরাবরই সমর্থন করে কাতার, এবার পুরো বিশ্ব সেটা দেখলো। এর মাধ্যমে, সবার কাছে এ বার্তা স্পষ্ট যে- একদিন না একদিন নিশ্চয়ই মুক্ত হবে ফিলিস্তিন।

প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনের ফুটবল দল না খেললেও, কাতার বিশ্বকাপে বারবারই কেনো উঠে আসছে ফিলিস্তিনের নাম? কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন- ফুটবল বিশ্বকাপ এমন একটা মঞ্চ; যেখানে- ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে মূখ্য হয়ে উঠেছে বৈচিত্র্য আর মানবিকতা।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply