পদত্যাগের পর বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া

|

অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়াকে বিএনপির সকল পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার দুই দিন পর তাকে বহিষ্কার করা হলো।

রোববার (১ জানুয়ারি) রাতে বিএনপির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকায় দলীয় গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) ধারা মোতাবেক বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তারকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে অব্যাহতি প্রদানপূর্বক বহিষ্কার করা হয়েছে।

এর আগে, জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগের পর বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদও ছাড়তে গত বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। বিএনপি থেকে পদত্যাগের কারণ জানতে চাইলে দলের প্রতি অভিমান আর ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাবেক এই সংসদ সদস্য। বলেছিলেন, এখন বয়স হয়েছে। আগের মতো দলের জন্য সময় দিতে পারি না। দলও মনে করে না, আমাদের আর কোনো প্রয়োজন আছে। দলের জেলা ও উপজেলা কমিটিও কোনো কিছু করার ক্ষেত্রে পরামর্শ নেয় না, জিজ্ঞেসও করে না। এতে খারাপ লাগে। এখন মনে হচ্ছে হয়তো দলে আর আমাদের প্রয়োজন নাই। এই অবস্থায় পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

একইসঙ্গে, সংসদ থেকে বিএনপির এমপিদের পদত্যাগের দলীয় সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল না বলেও মনে করেন আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। বলেন, দলের সকল সিদ্ধান্ত সারাজীবন মেনে এসেছি। কিন্তু সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত দূরদর্শী ছিল না। যদি আমাদের সঙ্গে দল এই বিষয়ে পরামর্শ করতো, তাহলে হয়তো ভালো পরামর্শ দিতে পারতাম। তারপরেও দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যে কারণে আমরা এটা মানতে বাধ্য।

১৯৭৯ সালে প্রথম তৎকালীন কুমিল্লা-১ (নাসিরনগর ও সরাইলের একাংশ) থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। ওই সময় তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি ছিলেন। দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। এরপর ১৯৯১ সালে এবং ১৯৯৬ সালের দুইটি সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ইসলামী ঐক্যজোটের তৎকালীন চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে আসনটি ছেড়ে দেন আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। ওই সময় বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার গঠন করলে তাকে টেকনোক্রেট প্রতিমন্ত্রী করা হয়। জোট সরকারের বিভিন্ন সময়ে চারটি মন্ত্রণালয়ে (আইন, ভূমি, মৎস্য এবং বিদ্যুৎ) দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ব্রাহ্মনবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ আসনে) আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া ধানের শীষ প্রতীকে বিজয়ী হয়েছিলেন।

বিএনপি দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১১ ডিসেম্বর বিএনপির অন্য ছয় এমপির সঙ্গে তিনিও জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তার ছেড়ে দেয়া শূন্য আসনে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply