জটিলতার প্যাঁচে থমকে আছে চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত বে-টার্মিনাল প্রকল্প

|

নানা জটিলতার বৃত্তে বন্দি চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত বে-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প। ৯ বছরে কেবল সাগর তীরে সাইনবোর্ডই লেগেছে, মূল কাজের কোনো অগ্রগতি নেই। প্রকল্পের ধীরগতিতে হতাশ আমদানি-রফতানিকারক তথা বন্দর ব্যবহারকারীরা। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, ঋণ প্রস্তাব এবং বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ প্রস্তাব যাচাইয়ে সময় লাগছে।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে কাট্টলী পর্যন্ত সমুদ্র উপকূলের ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার অংশ জুড়ে এ প্রকল্পের জন্য সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। ৯ বছর ধরে সাইনবোর্ডগুলো দাঁড়িয়ে আছে স্বস্থানেই। কন্টেইনার ইয়ার্ড নির্মাণের জন্য তিন বছর আগে শুরু হয় মাটি ভরাটের কাজ। তবে দেশের ব্যবসায়ীদের স্বপ্নের এই প্রকল্পের অগ্রগতি বলতে এতটুকুই। নানা জটিলতায় আটকে আছে প্রকল্পের মূল কাজ।

বিজিএমইএ এর ১ম সহ সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলছেন, দ্রুত এ টার্মিনালের কাজ শেষ না হলে ১০০ বিলিয়ন ডলারের যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা এগোচ্ছি, তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।

সম্প্রতি, এ প্রকল্পে ঋণ দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তিনটি টার্মিনালের মধ্যে দুটি নির্মাণে বিনিয়োগ করতে চায় চীন, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়াসহ অন্তত ৮টি দেশের নয়টি বন্দর পরিচালনাকারী সংস্থা। বিনিয়োগের লাভ ক্ষতির হিসাব করতেই কিছুটা সময় লাগছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।

চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাজাহান জানালেন, একটি বিজনেস মডেল হাতে পাওয়ার পর সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ-আলোচনা করা হবে। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আর এ প্রক্রিয়ার জন্যই প্রকল্পের কাজে ধীরগতি।

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানির ক্রমবর্ধমান চাপ সামলাতে বে-টার্মিনালকে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে নেয়া হয়। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের মূল্যবৃদ্ধিসহ সামগ্রিক পরিস্থিতির কারণে নির্মাণে ধীরগতি হচ্ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন, এই অর্থনৈতিক মন্দার পর আবার গতি এলে বে-টার্মিনালের প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়বে। তাই দ্রুতই সব সমস্যা ও জটিলতা কাটিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের তাগিদ দেন তিনি।

অবশ্য, ২০২৬ সালের মধ্যে অন্তত একটি টার্মিনাল নির্মাণের লক্ষ্যের কথা জানান নৌ-পরিবহনমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, কনসালটেন্ট নিয়োগ শেষ। এখন চট্টগ্রাম বন্দরের অংশের ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলছে। ডিপিপি প্রণয়নের কাজ শেষ হলেই আমরা কার্যক্রম শুরু করবো।

২৫০০ একরের এই বে-টার্মিনাল হবে বর্তমান বন্দরের চেয়ে ৬ গুণ বড়। এক সাথে ১৩টি জেটিতে ভিড়তে পারবে ৬ হাজার টিইইউএস কন্টেইনার বহনকারী ১২ মিটার ড্রাফটের জাহাজ। তাই এই প্রকল্প দেশের ব্যবসায়ীদের স্বপ্ন, যা দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান তাদের।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply