তুরস্ক কেন ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল?

|

ছবি: সংগৃহীত

তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১৬শ’ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন অনেকে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আরও অনেক বাড়তে পারে প্রাণহানি। স্থানীয় সময় সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে অনুভূত হয় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার কম্পন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বিস্তীর্ণ জনপদ। মূলত, ভৌগোলিক অবস্থিতির কারণে তুরস্ককে পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

তাছাড়া, তুরস্কের সীমান্তবর্তী শহর গাজিয়ানতেপে সোমবারের ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অনেক বেশি। কারণ, এর তীব্রতা ছিল রিকটার স্কেলে ৭ দশমিক ৮। সেই সাথে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল অপেক্ষাকৃত অগভীর। আর, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের গভীরতার সাথে ক্ষয়ক্ষতির ব্যস্তানুপাতিক সম্পর্কের সাথে তীব্রতার সাথে ক্ষয়ক্ষতির সমানুপাতিক সম্পর্ক বিদ্যমান।

কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সের প্রফেসর ক্রিস এলডার্স বলেছেন, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিলোমিটার (১১ মাইল) গভীরে। যার কারণে, এর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও ব্যাপক। ভূমিকম্পের ফলে নির্গত শক্তি ভূ-অভ্যন্তরের চেয়ে ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বেশি অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থলের গভীরতা যদি আরও বেশি থাকতো, তবে ভূ-পৃষ্ঠে এর প্রভাব হতো এরচেয়ে কম।

ছবি: আল জাজিরা থেকে সংগৃহীত

তুরস্কের অ্যাকাডেমিয়া অব সায়েন্সের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ নাসি গোরুর বলেন, তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্ত অবস্থিত আনাতোলিয়ান প্লেটের দুইটি বড় ফাটলের উপর। নর্থ আনাতোলিয়ান ফল্ট বা ফাটল অবস্থিত আনাতোলিয়ান প্লেট এবং ইউরেশিয়ান প্লেটের মাঝখানে। আর এখানেই অবস্থিত তুরস্কের উত্তরাঞ্চল। অন্যদিকে, ইস্ট আনাতোলিয়ান ফল্ট অবস্থিত অ্যারাবিয়ান প্লেটের উপর। আর এখানে অবস্থিত তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল। এই ভৌগোলিক অবস্থার কারণেই তুরস্ক বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল।

১৯৯৯ সালে, ৭ দশমিক ৪ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে তুরস্কে প্রাণ হারান ১৭ হাজারের বেশি মানুষ। সেই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল উত্তর-পূর্ব তুরস্কে। সোমবারের ভূমিকম্পের আগে একই তীব্রতার ভূমিকম্প দেশটিতে আঘাত হেনেছিল ১৯৩৯ সালে। তখন প্রাণহানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৩০ হাজার।

আরও পড়ুন: তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৬শ’, আহত ৫ হাজারের বেশি

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply