বুয়েটে ছাত্রদলের সংঘর্ষে নিহত সনির বাবার মৃত্যু

|

সনি'র বাবা ও বুয়েটে ছাত্রদলের দু’গ্রুপের গুলিতে নিহত সাবেকুন নাহার সনি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত সাবেকুন নাহার সনির বাবা হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হাবিবুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের বিজেশ্বর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ভূঁইয়ার ছেলে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।

নিহত সনির আত্মীয় জাহিদুল ইসলাম ইমন শনিবার দুপুরে বলেন, তিন মাস ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া। গত একমাস হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছিলেন উনাকে ৬টি কেমোথেরাপি দিতে। একটি থেরাপি দেয়া হয়েছিল। এরই মাঝে উনার নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। সকালে তিনি ঘুমের মাঝে ইন্তেকাল করেছেন।

মেয়েকে হারানোর পর ‘সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গনের’ দাবি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছিলেন হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া। এরমধ্যে, সনি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ৮ জুন ‘সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন’ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ৮ জুন টেন্ডারবাজিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বুয়েট ছাত্রদল সভাপতি মোকাম্মেল হায়াত খান মুকিত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের টগর গ্রুপ। দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে বুয়েটের আহসান উল্লাহ হলের সামনে সাবেকুন নাহার সনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। সাবেকুন নাহার সনি ছিলেন কেমিকৌশল বিভাগের (৯৯ ব্যাচ) লেভেল ২, টার্ম ২-এর ছাত্রী। তার মৃত্যুতে সেদিন জ্বলে উঠেছিল গোটা দেশ।

এই ঘটনার পর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলেন বুয়েটসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সারাদেশের মানুষ এই আন্দোলনে সমর্থন জানায়। আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত সনি হত্যা মামলার দ্রুত বিচার শেষে মুকিত ও টগরসহ তিনজনের ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। এই মামলার রায় ছিল, দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংগঠিত হত্যাকাণ্ডের প্রথম বিচার। সনি হত্যার দিনটিকে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ‘সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন করে।

২০০৬ সালের ১০ মার্চ হাইকোর্ট মুকিত, টগর ও সাগরের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এসএম মাসুম বিল্লাহ ও মাসুমকে খালাস দেন হাইকোর্ট। পরবর্তীতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত মোকাম্মেল হায়াত খান মুকিত পালিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ায়। পলাতক রয়েছে নুরুল ইসলাম সাগর ওরফে শুটার নুরু। আর টগর জামিনে মুক্ত।

এনবি/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply