আলোর মুখ দেখেনি যেসব আলোচিত বলিউডি সিনেমা

|

ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ছবি।

প্রতি বছরই নতুন নতুন সিনেমার ঘোষণা নিয়ে হাজির হন নির্মাতারা। কিছু সিনেমা  দর্শকের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকে। আবার, কিছু সিনেমা মুক্তির পরই হারিয়ে যায় বিস্মৃতির অতলে। কিছু সিনেমা ঘোষণায় আলোচনার জন্ম দিলেও, শেষ পর্যন্ত আর আলোর মুখ দেখে না। সে সিনেমাগুলোতে যেমন কম জনপ্রিয় বা নতুন তারকা থাকেন; বড় তারকাদের নিয়ে অনেক বড় বাজেটের সিনেমাও বাতিল হয়েছে।

মুকুল আনন্দ পরিচালিত ‘দশ’ সিনেমার কথা মনে আছে? নির্মাতার আকস্মিক মৃত্যুতে শেষ পর্যন্ত বাতিলই হয় সিনেমাটি। তবে সিনেমাটির কয়েকটি গান পরবর্তিতে মুক্তি দেয়া হয়, যেগুলো ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। দশের প্রধান চরিত্রে ছিলেন সঞ্জয় দত্ত, সালমান খান, রাবিনা ট্যান্ডন ও শিল্পা শেঠি। অন্যদিকে, শেখর কাপুরের ‘টাইম মেশিন’ বাতিল হয় অর্থসংকটে। হলিউডের ‘ব্যাক টু দ্যা ফিউচার’ এর রিমেক এ সিনেমায় ছিলেন আমির খান, রাবিনা ট্যান্ডন, রেখা ও নাসিরুদ্দিন শাহ।

‘হিরো’ ও ‘কারমা’র বিশাল সাফল্যের পর নির্মাতা সুভাস ঘাই তার পরবর্তী সিনেমায় অমিতাভ বচ্চনকে চুক্তিবদ্ধ করেন। এ সিনেমার মাধ্যমে প্রথমবারের মত একসাথে দেখা যেত সুভাষ-অমিতাভকে। কিন্তু, ১৯৮৭ সালে শুটিং চলাকালে এ দু’জনের মতবিরোধের কারণেই শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে সিনেমার কাজ। পরবর্তিতে বাতিল হয় নাম না জানা সেই প্রোজেক্ট।

ডেভিড ধাওয়ান পরিচালিত কমেডি সিনেমা ‘রাজু রাজা রাম’ এ ছিলেন জ্যাকি শ্রফ, গোবিন্দ, সালমান খান ও মনীষা কৈরালার মতো তারকারা। ১৯৯৮ সালে তারকাদের শিডিউল জটিলতায় পড়ে আর নির্মিত হয়নি এটি।

অন্যদিকে, অমিতাভ বচ্চনকে নিয়ে রাম মাধবানির আরেক বাতিল হয়ে যাওয়া সিনেমা ‘তালিসমান’। ভারতীয় মহাকাব্য ‘চন্দ্রকান্ত’র ওপর নির্মিত সিনেমাটির দেড় মিনিটের একটি টিজারও প্রকাশিত হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত স্থগিত করা হয় সেটিকেও।

২০০৭ সালে জনি ডেপকে নিয়ে ‘শান্তারাম’ নির্মাণের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন মীরা নায়ার। সিনেমাটিতে অমিতাভ বচ্চনকেও চুক্তিবদ্ধ করা হয়। ঘোষণার পরও গ্যাংস্টার কেন্দ্রীক গল্পের সিনেমাটি বিভিন্ন কারণে স্থগিত হয়। জানা গেছে, বর্তমানে অ্যাপল টিভি+ প্রকল্পটিকে পুনরুজ্জীবিত করেছে ও ওয়েব সিরিজ হিসেবে নির্মাণ করছেন। সিরিজটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন চার্লি হ্যানুম।

২০১১ সালে গুঞ্জন ওঠে, মার্টিন স্কোরসিসির ‘এক্সট্রিম সিটি’ সিনেমায় একসাথে অভিনয় করছেন শাহরুখ খান ও লিওনার্দো ডি’ক্যাপ্রিও। বলিউড এবং হলিউডের জনপ্রিয় দুই তারকার একসাথে অভিনয়ের খবর ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। সিনেমাটি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে আলাপও করেছিলেন মোশতাক শেখ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর কোন অগ্রগতি পাওয়া যায়নি।

২০০৬ সালে ‘লাগে রাহো মুন্নাভাই’ এর বিশাল সাফল্যের পর বিধু বিনোদ চোপড়া এবং রাজকুমার হিরানি ২০০৭ সালে ‘মুন্না ভাই চালে আমেরিকা’ সিনেমার ট্রেলার প্রকাশ করেন। কিন্তু, এরপরই সঞ্জয় দত্তের কয়েকবার জেলে যাওয়া ও সিনেমার দ্বিতীয় অংশের চিত্রনাট্য নিয়ে নির্মাতারা সন্তুষ্ট না থাকার কারণে শেষ পর্যন্ত বাতিল হয় প্রোজেক্টটি। যদিও সম্প্রতি মুন্না ভাই ফ্রাঞ্ছাইজির তৃতীয় পর্ব নির্মাণের কথা শোনা যাচ্ছে কিন্তু নতুন এ সিনেমার প্লট হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন।

ঘোষণার পরও সিনেমা বাতিল হওয়ার ঘটনা বলিউডে বেশ নিয়মিত। এর মধ্যে কিছু সিনেমা, নির্মাতার সাথে প্রধান অভিনেতার মত পার্থক্যের কারণেও বাতিল হয়েছে। আবার কিছু সিনেমা বড় বাজেটের হওয়ায় সেগুলো নির্মাণের যৌক্তিকতাও অনেক সময় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সাম্প্রতিক বলিউডি সিনেমাগুলোর বক্স অফিসে হতাশাজনক ফলাফলও এর একটা কারণ। ‘পাঠান’ এর তুমুল সাফল্যের পরও নতুন বছরে কতোটা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলিউড, সেটাই এখন প্রশ্ন।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply