বাধ্য হয়ে প্রেমিকাকে বিয়ে, হত্যার পর মানসিক পীড়ায় নিজেই কৌশলে জানিয়ে দেন লাশের হদিস

|

পিরোজপুর প্রতিনিধি:

পিরোজপুরের নাজিরপুরে নিখোঁজের চার মাস পর বালি চাপা অবস্থায় লামিয়া (১৯) নামে এক গৃহবধূর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের রহস্য উন্মোচন করেছে পিবিআই। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আসামি লামিয়ার স্বামী তরিকুল ইসলামকে (২২) ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত তরিকুল এরই হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মানসিক পীড়ায় একসময় নিজেই লাশের অবস্থান জানিয়ে দেয় সে। সেই সূত্র ধরেই তরিকুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

শুক্রবার (১৭ মার্চ) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ সব তথ্য জানায় পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মো. তরিকুল ইসলাম পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার দক্ষিণ চিথলিয়া গ্রামের মিজান খানের ছেলে।

পিবিআই পিরোজপুর কার্যালয়ের সাব ইন্সপেক্টর (নি:) রিফাত ইমরান জানান, গত ১৩ মার্চ ৪ মাস ধরে নিখোঁজ থাকা লামিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুর ১২টা নাগাদ মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদ এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে লামিয়ার স্বামী মো. তরিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বিষয়টি তরিকুল স্বীকার করে বলে জানায় পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ঘটনার মূল সূত্রপাত হয় ২০২২ সালে। ওই সময় লামিয়ার সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তরিকুলের। তবে এক পর্যায়ে লামিয়ার দুটি অশ্লিল ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় লামিয়া তরিকুলকে দায়ী করলে সমাজের চাপে লামিয়াকে বিয়ে করতে বাধ্য হয় তরিকুল। তবে তাদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো ছিল না মোটেও।

এরই এক পর্যায়ে গত ৬ নভেম্বর সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়ে লামিয়ার সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে তরিকুল। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে লামিয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সে। পরে তাকে পার্শ্ববর্তী খালপাড়ে নিয়ে বালু চাপা দিয়ে দেয়।

তবে বিষয়টি নিয়ে মানসিকভাবে অস্বস্তিতে ছিল তরিকুল। এরই মধ্যে ৪ মাস ধরেও লামিয়ার লাশ খুঁজে পায়নি স্বজনরা। তাই নিজেই বাধ্য হয়ে লাশের হদিস দিতে কৌশল অবলম্বন করে তরিকুল। একটি চিরকুটে লাশের অবস্থান লিখে লামিয়াদের বাড়ির চালে ছুড়ে ফেলে পালিয়ে যায় সে। সেই চিরকুটের সূত্র ধরেই গত ১৩ মার্চ লামিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।

অবশেষে সেই চিরকুটের মাধ্যমেই পুলিশ তরিকুলকে গ্রেফতার করে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানায় পুলিশ।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply