আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমেছে বাংলাদেশ। প্রথম সেশনের মধ্যে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারায় আইরিশরা। দ্বিতীয় সেশনে হ্যারি টেক্টর ও কার্টিস ক্যাম্ফারের জুটিতে শুরুর চাপ কাটিয়ে ওঠার পথে ছিল আয়ারল্যান্ড। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে স্রেফ ২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফের বিপদে পড়েছে আইরিশরা।
মিরপুরের শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি। শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগার পেসারদের সামনে ধুঁকতে থাকে আইরিশ ব্যাটাররা। ইনিংসের ৫ম ওভারেই আসে সফলতা। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের স্ট্যাম্প তাক করে করা ফুল লেংথ ডেলিভারির লাইনে যেতে পারেননি আইরিশ ওপেনার মারে কামিন্স। ব্যাটের কানা ফাঁকি দিয়ে বল প্যাডে লাগলে জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। উদ্বোধনী জুটিতে সঙ্গী জেমস ম্যাককলামের সঙ্গে কথা বলে রিভিউ না নিয়ে ফিরে যান কমিন্স। ভাঙে ১১ রানের জুটি। ব্যাক্তিগত ৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটার।
এরপরেই উইকেটে থিতু হতে থাকা আরেক আইরিশ ওপেনার জেমস ম্যাককলামকে ফেরান ইবাদত হোসেন। ইবাদতের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের একটু বাড়তি বাউন্স করা বল ঠিক মতো খেলতে পারেননি আইরিশ ওপেনার। ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ যায় দ্বিতীয় স্লিপে, নাজমুল হোসেন শান্তর কাছে। দ্বিতীয় চেষ্টায় বল মুঠোয় জমান তিনি। ১টি চারের সাহায্যে ৩৪ বলে ১৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন ম্যাককলাম।
দ্রুত দুই ওপেনারকে হারানোর পর অ্যান্ড্রু বালবার্নি ও হ্যারি টেক্টরের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে আয়ারল্যান্ড। কিন্তু চমৎকার এক ডেলিভারিতে তাদের জমে যাওয়া জুটি ভেঙে দেন তাইজুল ইসলাম। অনেকটা সময় ক্রিজে থাকলেও সহজে রান পাচ্ছিলেন না বালবার্নি। সুইপ করে চাপ কিছুটা সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক। সেই শটই কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য।
ফুল লেংথ বল ব্যাটের কানা এড়িয়ে আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউর জোরালো আবেদনে সাড়া দিলে একটু সময় নিয়ে রিভিউ নেন বালবার্নি। বল আঘাত হানতো অফ স্ট্যাম্পে। তবে ইম্প্যাক্ট ‘আম্পায়ার্স কল’ ছিল বলে নষ্ট হয়নি আইরিশদের রিভিউ। বালবার্নির বিদায়ে ভাঙে ৭১ বল স্থায়ী ২১ রানের জুটি। ৫০ বলে ১৬ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন আইরিশ অধিনায়ক।
৬৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে মুখ থুবরে পড়া আইরিশদের খাদের কিনারা থেকে তোলেন হ্যারি টেক্টর ও কার্টিস ক্যাম্ফার জুটি। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে অভিষেক টেস্টে ফিফটি করে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান টেক্টর। সৈয়দ খালেদ আহমেদের বলে সিঙ্গেল নিয়ে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন টেক্টর। সঙ্গে গড়েন দারুণ এক কীর্তি, আয়ারল্যান্ডের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট অভিষেকে ফিফটি করেন তিনি। ৮০ বলে ফিফটি করার পথে টেক্টর মেরেছেন ১টি ছক্কা ও ৬টি চার।
টেক্টরকে যোগ্য সঙ্গ দেন ক্যাম্পফার। দুজনে মিলে গড়েন ৭৪ রানের জুটি। তবে এই জুটিকে তিন অঙ্ক পর্যন্ত পৌঁছাতে দেননি অফ স্পিনার মিরাজ। এই স্পিনারের করা অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল বেশ দূর থেকে অন সাইডে খেলার চেষ্টা করেন টেক্টর। বল তার ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে। ভাঙে ১২২ বল স্থায়ী ৭৪ রানের জুটি। ৮০ বলে ৫০ ছোয়ার পর ৯২ বলে ওই রানেই ফেরেন টেক্টর।
টেক্টর ফেরার পর পুনরায় ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে আইরিশরা। তাইজুল ইসলামের ফুল লেংথ ডেলিভারি ক্রস ব্যাটে খেলার চেষ্টা করেন পিটার মুর। ব্যাটের কানায় লেগে বল উঠে যায় আকাশে। মিড অফে দাঁড়িয়ে সহজ ক্যাচ লুফে নেন তামিম ইকবাল। ৮ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফেরেন মুর।
টেক্টর ও পিটার মুরের পর তাইজুল ইসলামের তৃতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছেন ক্যাম্ফার। তাইজুলের আর্ম বল সামনের পায়ে ভর করে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেছিলেন আইরিশ অলরাউন্ডার। ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে সামনের প্যাডে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও নিজের উইকেট বাঁচাতে পারেননি ক্যাম্পার। আম্পায়ার্স কলের কারণে প্যাভিলিয়নের পথ ধরতে হয় তাকে। ৭৩ বলে ৬ চারে ৩৪ রান করেন তিনি।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান।
/আরআইএম
Leave a reply