আসাদের প্রত্যাবর্তন কি মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য কমানোর ইঙ্গিত?

|

ছবি: সংগৃহীত

মৌলি ইসলাম:

সিরিয়া যুদ্ধ কি তাহলে শেষ হলো? দীর্ঘদিন একঘরে থাকা প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ আরব লিগে ফেরার পরই সামনে এলো প্রশ্নটি। বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্য এবং আরব বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য কমানোর স্বার্থেই এ প্রত্যাবর্তন। অনেকের অভিমত, তাতে কমবে শিয়া বলয়ের প্রভাবও।

দীর্ঘ একযুগ পর, মাথা উঁচু করেই আরব লিগে ফিরেছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগে ১০-১১ বছর আগেও যেসব প্রতিবেশী রাষ্ট্র সিরিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল,
তারাই স্বাগত জানিয়েছেন আসাদকে। তাতে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছে, অবশেষে কি মধ্যপ্রাচ্য ও আরব বিশ্ব হাল ধরছে বিধ্বস্ত দেশটির অর্থনীতির?

কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খেইর দিয়াবেত বলেন, আরব দেশগুলোও বুঝতে পেরেছে তাদের সামনে দু’টি পথই খোলা। রাজনৈতিক ফাটল পূরণ করতে হবে, ঘুরাতে হবে ভৌগোলিক কম্পাস। যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে আরব লিগে সিরিয়াকে ফেরানো। তারাও বুঝতে পারছে, সংঘাতের তুলনায় সহাবস্থান জরুরি।

আরব বিশ্বে আসাদের এই প্রত্যাবর্তন স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির ইউরোপীয় মিত্ররা। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, আধিপত্যবাদ শেষ হওয়ার ঘণ্টা বাজিয়ে দিলো দামেস্ক।

সৌদি আরবের রাজনৈতিক বিশ্লেষক আবদুল আজিজ আল রাজিন বলেন, প্রতিক্রিয়ায় বোঝাই যাচ্ছে, আরব দেশগুলোর ঠিক উল্টো অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়ার প্রতি নব্য-উপনিবেশবাদ বহাল রাখতে চায় তারা। মার্কিন উদ্দেশ্য হলো যুদ্ধ টিকিয়ে রাখা। তাতে কোটি কোটি ডলারের অস্ত্র বাণিজ্য চালাতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র। মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার কারণে তারা লাভবান হবে।

সিরিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাহমুদ সালেহ্ বলেন, আধিপত্যবাদের মাধ্যমে দীর্ঘদিন মধ্যপ্রাচ্যের মানুষদের দমন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশগুলো এতোদিনে বুঝেছে, মার্কিন নীতিমালা পুরোপুরি ভুল। তাতে দরিদ্ররা অনাহারে মরছে, লুট করা হচ্ছে তাদের সহায় সম্পদ। সিরিয়াই দেখিয়েছে, দেশটির সমাজ, সংস্কৃতি, সার্বভৌমত্ব ধ্বংস করতে চায় ওয়াশিংটন।

মূলত সৌদি আরবের যুবরাজ এবং প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের উদ্যোগে সম্ভব হয়েছে সম্পর্কের এই পুনঃনবায়ন। তার দাবি, আরব বিশ্বের অতীত ঐতিহ্য এবং সমৃদ্ধ ফেরাতে প্রয়োজন সবার অংশগ্রহণ। তাছাড়া, একক শিয়া দেশ হিসেবে ইরানের ছড়ি ঘোরানো বন্ধেও প্রয়োজন ছিল সিরিয়ার প্রত্যাবর্তন।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply