দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশসহ চার দেশে রেকর্ড তাপমাত্রা বৃদ্ধি

|

আহমেদ রেজা:

১৭ এপ্রিল ২০২৩, বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন ১৮ এপ্রিল ভারতের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি শহরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৪ ডিগ্রির উপরে। এছাড়া থাইল্যান্ডের তাক শহরে ১৫ এপ্রিল ৪৫.৫ ডিগ্রি এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ লাওসের সাইনিয়াবুলি প্রদেশে ১৯ এপ্রিল সেখানকার সর্বকালের তাপমাত্রা রেকর্ড হয়, যা ছিল ৪২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জাতিসংঘের দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত কয়েক দশকে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে এই তাপ প্রবাহ সর্বোচ্চ। আর এর স্থায়ীত্বকাল ও আর্দ্রতাও বেশি। মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই আবহাওয়ার এমন আচরণ বলছে সংস্থাটি।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৪টি দেশে রেকর্ড হারে বাড়ছে তাপমাত্রা। ফলে পানি ও কৃষির ওপর বিরূপ প্রভাবের পাশাপাশি বাড়ছে হিট স্ট্রোক ও মৃত্যুঝুঁকি।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, কয়েক দশক ধরেই বাংলাদেশে হিটওয়েবের স্থায়িত্ব বাড়ছে। আর এটি শঙ্কা জাগাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।


যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।

আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আবদুর রহমান খান বলেন, এপ্রিলে সারাদেশে ১০-১৫ দিন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়নি। কিন্তু গরম বেড়েছে। জুনের ৭ তারিখ পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের কিছু জায়গা ছাড়া সারাদেশে হিটওয়েব কন্ডিশন চলে। আগে হয়তো ৭-৮ দিন হতো, তারপর চলে যেতো। এখন দেখা যাচ্ছে ঘন ঘন হচ্ছে। আর স্থায়ীত্বও বাড়ছে।

তবে বিশ্লেষকদের মতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই ভয়াবহ এই দুর্যোগ। সবুজায়ন ধ্বংস ও জলাভূমি দখল করে অবাকাঠামো নির্মাণে তাপমাত্রার প্রখরতা বাড়ছে; যার প্রভাব পড়ছে পানি, কৃষি ও মানব দেহের ওপর।

জলবায়ু ও পরিবেশ নীতি বিশ্লেষক এম জাকির হোসেন খান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য যে উন্নয়ন মডেল আমরা সেটি নিয়েছি। উন্নয়ন মডেলটা হলো, গাছ কাটতে হবে, বন নিধন করতে হবে, জলাভূমির ওপর অবকাঠামো করতে হবে।

হিট স্ট্রোক বাড়ায় শঙ্কা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বলছেন, সাধারণত মানবদেহ ৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। এর বেশি হলে শরীরে প্রোটিনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। ক্ষতি হয় মস্তিষ্কের। এছাড়া ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় দীর্ঘক্ষণ বাইরে থাকলে হতে পারে হিট স্ট্রোক।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আয়েশা আক্তার বলেন, বেশি তাপমাত্রার মধ্যে বাইরে যদি দীর্ঘক্ষণ একটানা কাজ করলে শরীর তা নিতে পারে না। হিট স্ট্রোক যদি হয়, শরীর ঘাম দেবে না, আর ঝিরঝির করতে থাকবে।

এদিকে, তাপমাত্রা সহনীয় রাখতে প্রতিটি নগরীকে আলাদাভাবে সবুজায়ন ও পরিবেশ খাতে বাজেট বরাদ্ধের দাবি জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply