এডিস মশার চরিত্র বদল; কামড়াচ্ছে রাতে, জন্মাচ্ছে ময়লা পানিতে

|

আখলাকুস সাফা:

চরিত্র পাল্টেছে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা। শুধু দিনেই নয়, এডিস মশা এখন কামড়ায় রাতেও! বিশেষ করে রাতের শেষভাগ ও ভোরের দিকে আরও বাড়ছে এডিসের উপদ্রব। সম্প্রতি কীটতত্ত্বের এক গবেষণা এমনও বলছে, হোক পরিষ্কার কিংবা ময়লা, যে কোনো আবদ্ধ পানিতেই জন্মাচ্ছে এডিসের লার্ভা। রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ সিটির বেশ কিছু এলাকায় বাস্তবে যার অস্তিত্বও পাওয়া গেছে।

এ নিয়ে গবেষণা করেন কীটতত্ত্ববিদ ডক্টর কবিরুল বাশার। তিনি জানান, এ বছর পাল্টে গেছে এডিসের চরিত্র। অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, এডিস ইজিপ্টাই হচ্ছে ডেঙ্গুর প্রধান বাহন। এবার জানা গেছে, এটি রাতেও কামরায়। লাইট পল্যুশন (আলো দূষণ) হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় আলোর অত্যাধিক ব্যবহার এই মশার আচরণে পরিবর্তন এনেছে।

বদলে যাওয়া চরিত্রের মশা থেকে ছড়ানো ডেঙ্গুরও হয়েছে মিউটেশন। হাসপাতালে রোগীদের একেকজনের লক্ষণ-উপসর্গ একেক রকম। জ্বর, বমি, পেটে ব্যথা, ডায়রিয়ার কথা জানান একজন ডেঙ্গু রোগী। আরেকজন জানান, একদিন বিকেলে হঠাৎ করে শরীর লালচে হয়ে গেল। অনেক চুলকানি ছিল। এরপর রাতে আসে জ্বর। আরেক রোগী বলেন, তার পা হলুদ হয়ে গিয়েছিল। সাথে মাথা ব্যথা, ১০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস জ্বর।

চিকিৎসকরা বলছেন, আগের সব ধারণা পাল্টে সারাদিনই মশা থেকে দূরে থাকতে হবে, সে যেভাবেই হোক। যেকোনো লক্ষণে দ্রুত ডেঙ্গুর এনএস ওয়ান পরীক্ষা করাতে হবে।

মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, জ্বর হলে ডায়রিয়া শুরু হয়ে যায়; যেটি ওষুধে কমছে না। বমি বন্ধ করা যাচ্ছে না। পেটে ব্যথাকে হয়তো চিকিৎসক অ্যাপেন্ডিসাইটিস ভাবছেন। কিন্তু রোগী ডেঙ্গুর ‘কলিগে’ ভুগছেন। তারপর আছে মস্তিষ্কে তীব্র প্রদাহ, যেটাকে ‘ম্যানিঙ্গো ইনগ্লে ভালাইটিস’ বলে। শরীরের পানি জমা যেমন, বুক ও পেটে পানি জমা- এসব উপসর্গ প্রথাগত ডেঙ্গুর উপসর্গ নয়।

আগেও ডেঙ্গু হয়েছিল, এমন রোগীদের শক থেকে বাঁচতে লক্ষণের সাথে সাথে হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply