সিরিয়ায় বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের নিচে জন্ম নেয়া শিশুটির কথা আমাদের সবারই জানা। এমন মর্মান্তিক ঘটনার মধ্যে শিশুটির জন্মের পর তার ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠায় ছিল গোটা বিশ্ব। তবে সব দুশ্চিন্তার অবসান ঘটেছে। নতুন করে পরিবার ফিরে পেয়েছে শিশুটি। বাবা-মা, ভাইবোনের ভালোবাসায় একটু একটু করে বেড়ে উঠছে সে। খবর এবিসি নিউজের।
চলতি বছর তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের নিচে জন্ম নিয়ে দশ ঘণ্টা বেঁচে ছিল শিশুটি। এরপর তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়। হৃদয়স্পর্শী ওই ঘটনা সে সময় নাড়া দিয়েছিল গোটা বিশ্বকে। বাবা-মা আর চার ভাইবোনকে হারানো এতিম ওই নবজাতকের ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠায় ছিলেন অনেকে। এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষের তাকে পালনের আকুতি জানাতে থাকেন অসংখ্য মানুষ।
তবে সব দুশ্চিন্তা কাটিয়ে শিশুটিকে তুলে দেয়া হয়েছে তারই ফুপু-ফুপার কাছে। নতুন পরিবারে পরম মমতায় পালিত হচ্ছে বিস্ময় শিশুটি। এখন তার বয়স ছয় মাস। পরিবারের সদস্যরা তার নাম দিয়েছে আফরা।
শিশুটির পালক পিতা খালিদি আল সাদাওয়ি বলেন, আফরা আমার মেয়ে। আমার নিজের সন্তানদের মতো করেই ওকে ভালোবাসি। ওর বড় ভাইবোনেরা ওকে খুব ভালোবাসে। শিশুটির দায়িত্ব দেয়ার জন্য আল্লাহকে ধন্যবাদ জানাই। বাচ্চাটা সারাক্ষণ হাসতে থাকে। অপরিচিত কাউকে দেখলেও ওর মুখে হাসি লেগেই থাকে।
সিরিয়ার মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের বাসিন্দা হিসেবে শিশুর লালন-পালনের দায়িত্ব নেয়া খুব সহজ ছিল না খালিদির জন্য। নানা অভিযোগ আর অনিশ্চয়তার মাঝেই আফরাকে বড় করে তোলাটাকেই প্রধান কর্তব্য বলে মনে করেন তিনি।
খালিদি বলেন, মেয়েটিকে দত্তক নেয়ার বিনিময়ে আমি কোনো অর্থ নেইনি। অনেকে মেয়েটার জন্য দুধ আর ডায়পার দিয়েছে। কিন্তু এছাড়া বড় অঙ্কের অর্থ নেয়ার কথা সম্পূর্ণ অসত্য। যারা এ ধরনের কথা বলে, তাদেরকে প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জ করছি।
নিজের সন্তানের মতো করে আফরাকে বড় করলেও, ভবিষ্যতে পরিবার এবং জন্মের সেই ঘটনা শিশু আফরাকে জানাতে চায় তার পরিবার।
এসজেড/
Leave a reply