উৎসে কর নেই, তবে সিরাজগঞ্জে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অর্থ আদায়!

|

সিরাজগঞ্জ করেসপন্ডেন্ট:

উৎসে কর আদায়ের কোনো বিধান নেই। কিন্তু এই অজুহাতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের বিরুদ্ধে। এ কাজের সাথে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারি জড়িত আছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জাকির হোসেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর অভিযোগ করার পর বিষয়টি আলোচনায় আসে।

জাকির হোসেন জানান, ওয়ারিশ সূত্রে তার পরিবারের ৬ জন জমির মালিক হন। সেই জমি নিজেদের মধ্যে বন্টন করে নিতে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গেলে তিনি প্রতারণার শিকার হন। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে পিয়ন শাহাদতের মাধ্যমে তিনি দলিল লেখক রিজওয়ান রশিদের কাছে যান। রিজওয়ান তাকে জমির মোট মূল্য ৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা হিসাবে উৎসে কর বাবদ ৩ লাখ ১৪ হাজার ৬৩০ জমা দিতে হবে বলে জানান। পরে তিনি তাদের পরামর্শে সে মোতাবেক তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক থেকে পে অর্ডার করেন।

পরবর্তীতে দলিলের নকল তুলে তিনি দেখতে পান উৎস করের জায়গায় লেখা ৩১ হাজার ৫৩০ টাকা লেখা। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে তিনি সাংবাদিকদের সহায়তায় ব্যাংক স্টেটমেন্ট তুলে দেখতে পান পে-অর্ডারের পুরো টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। পরে খোঁজ নিয়ে তিনি আরও জানতে পারেন ওয়ারিশদের মধ্যে বন্টন দলিলে কোনো উৎসে করই দিতে হয় না।

এ বিষয়ে নকল নবিশ সিয়াম হোসেন দাবি করেন, তিনি ভুল করে উৎস করের বিষয়টি দলিলে উল্লেখ করেছেন। আর জাকির হোসেনের হয়ে পে অর্ডারকারী আব্দুল মান্নান দায় চাপান দলিল লেখক রিজওয়ানের ওপর। এছাড়া প্রতারণায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পিয়ন শাহাদত হোসেনও।

সোনালী ব্যাংকের রায়গঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক এমদাদুল হক বলেন, মুহুরিরা যখন পে অর্ডার করে তখন তা সাব রেজিস্টারের নামে ইস্যু করা হয়। কোনো কারণে যদি দলিল না হয় তাহলে যার স্বাক্ষরে পে অর্ডার হবে সে আবেদন করে তা ভাঙাতে পারবে। প্রায়ই সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের পে অর্ডার ভাঙানো হয়।

ঘটনার বিষয়ে সম্প্রতি সাব-রেজিস্ট্রারের সামনে দলিল লেখক রিজওয়ানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সাব রেজিস্ট্রারের নির্দেশেই তিনি উৎস করের পে অর্ডার করতে বলেন দলিল গ্রহীতাদের। পরবর্তীতে এই টাকা কার কাছে গেছে তা জানা নেই।

এ ঘটনায় রায়গঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার সাগর দাশ বলেন, অফিসার সংকটের কারণে আমরা অফিসে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারি না। তাই আমাদের স্টাফদের ওপর ভরসা করতে হয়। সে কারণে কোনো চক্র গড়ে উঠতে পারে।

অভিযোগের বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রায়গঞ্জের এই সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে উৎসে করের নামে টাকা আত্মসাতসহ আরও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

/আরএইচ/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply