গ্রীষ্মের উত্তপ্ত দিন। সূর্য ঠিক মাথার ওপর। এর মধ্যে রিকশায় যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের দিকে দৌঁড়ে চলেছেন উদ্যমী এক তরুণী। প্যাডেল বা অটোচালিত রিকশা নয়, ‘হাতে টানা রিকশা’। মুখ ভিজে আছে ঘামে। তবু বিস্তৃত হাসি তার ঠোঁটে। গলায় ঝুলছে একটি লকেট। যাতে লেখা-‘আমি হাল ছাড়বো না’। জাপানের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা আসাকুসা। যেখানে হরহামেশাই দেখা মিলবে এমন নারী রিকশাচালকদের। বলা যায়, জাপানি নারীদের মনোযোগ কাড়ছে এই ‘টানা রিকশা’।
তিনি বলেন, আমি ইউকা আকিমোতো। প্রায় দুই বছর ধরে রিকশা চালাচ্ছি। প্রতিদিন আমি এভাবে হাসিমুখে কাজ করি। আমার কাছে রিকশা চালানোকে একটি মজার কাজ বলে মনে হয়।
তবে রিকশাচালক হওয়ার পথটা খুব সহজ ছিলো না ইউকার মতো নারীদের। উত্তীর্ণ হতে হয়েছে পরীক্ষায়। শেষ করতে হয়েছে কঠিন ট্রেনিং। আর প্রতিদিন হাজারো মানুষের কটু কথা আর বিব্রতকর চাউনি তো রয়েছেই।
ইউকা বলেন, সাধারণত রিকশা চালানোকে পুরুষের কাজ হিসেবে ধরে নেয়া হয়। পরিচিত-অপরিচিত অনেকেই মেয়ে হয়ে আমার এই রিকশা চালানোটাকে সহজভাবে নিতে পারেনি। মানুষ প্রায়ই এমন অদ্ভুতভাবে তাকায়, যেন ভূত দেখছে। প্রথমে কাজটি অনেক কঠিন মনে হতো আমার। বেশ কয়েকবার রিকশাসহ পড়েও গিয়েছিলাম। তবে ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে ধীরেধীরে পারদর্শী হয়ে উঠেছি। এখন কাজটি আমি উপভোগ করি।
অবশ্য নারী রিকশাচালকদের ভিডিও ব্যাপক প্রশংসাও কুড়োচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বাড়ছে চালকদের জনপ্রয়িতা। সাথে বাড়ছে আয়। পাশাপাশি এ পেশায় যোগ দিতে আরও বেশি করে আগ্রহী হচ্ছেন দেশটির নারীরা।
আরেক নারী রিকশাচালক বলেন, গত বছর সামাজিক যোগোযোগমাধ্যমে এক নারী রিকশাচালককে ফলো করতে শুরু করি আমি। তার ভিডিওগুলো দেখে এ পেশায় আসতে আগ্রহবোধ করি। একই সাথে এ ভিডিওগুলো আমাকে আত্মবিশ্বাসীও করে। চলতি বছর চালক হওয়ার জন্য আবেদন করে নির্বাচিত হই। এখন ট্রেনিং নিচ্ছি।
জাপানের এ পর্যটন এলাকার একজন নারী রিকশাচালক মাসে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৮শ’ ডলার পর্যন্ত আয় করছেন। যা দেশটির জাতীয় গড় মাসিক মজুরির প্রায় ৩ গুণ।
/এএম
Leave a reply