আবারও অস্থির চিনির বাজার, নির্ধারিত দামে পাচ্ছেন না ক্রেতারা

|

প্রতিকী ছবি

সাইফুল ইসলাম:

চিনির আমদানি শুল্ক কমালেও সুফল পাচ্ছেন ভোক্তারা। বাজারে খোলা চিনির বিপুল সরবরাহ থাকলেও ডিলার পর্যায় থেকেই প্যাকেটজাতের যোগান নেই। ফলে দামের উত্তাপ ছড়িয়েছে সারাদেশেই। এতে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

চিনি উৎপাদক সমিতি বলছে, ডলারের উচ্চমূল্যের কারণে আমদানি খরচ বেড়েছে। এজন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতি কেজির দাম ১৪৮ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব পাঠানো হয়। তবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হওয়ার আগেই বাজারে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। খোলা চিনির দর উঠেছে দেড়শো টাকা।

রাজধানীর কারওয়ানবাজারে কথা হয় এক ক্রেতার সাথে। তিনি বলেন, চিনি খোলা বাজারে ১৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আমি একটি দোকান থেকে ১৪০ টাকায় নিয়েছি। আরেক ক্রেতা বলেন, সব জায়গায় চিনির দাম বেশি। দাম আরেকটু সহনীয় পর্যায়ে রাখলে আমাদের জন্য উপকার হতো।

এর আগে, নভেম্বরের শুরুতে সরকার আমদানি শুল্ক কমিয়ে চিনির বাজারের লাগাম টেনে ধরার উদ্যোগ নেয়। তবে তার প্রভাব পড়েনি বাজারে। বরং আরও দাম বেড়েছে। তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম কারসাজির জন্য মিলারদেরকেই দুষছেন।

এ বিষয়ে একজন পাইকার বলেন, চিনির দাম নির্ধারণ করে মিলগুলো। ব্যবসায়ীদের কারসাজি করার কোনো সুযোগ নেই। কারসাজি মিলারদের। সব জায়গায় চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৬ থেকে ১৩৮ টাকায়। তবে মহল্লার দোকানিরা তো অনেককিছু চিন্তা করে বিক্রি করে। তারা এখান থেকে ১০/১৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি করে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতি বলছে- ডলারের উচ্চমূল্যের প্রভাবে আমদানিতে ব্যয় বেড়েই চলছে। যার ফলে খুচরা পর্যায়ে চিনির দাম বেড়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী মো. আবুল হাসেম বলেন, প্রতি কেজি চিনিতে ৪২ টাকার মতো ট্যাক্স দিতে হয়। সরকার নির্ধারিত দরে ডলার মিলছে না। চার-পাঁচটা ব্যাংক মিলেও একটি জাহাজের এলসির টাকা দিতে পারছে না। যার কারণে এর প্রভাব পড়ছে আমদানিতে। তিনি জানান, ভারত থেকে অবৈধ পথে চিনি আসছে। নাহয় দাম আরও বাড়তো।

রমযান মাস সামনে রেখে অস্থিরতা রোধে এখনই পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, রমজানে চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে যায়। সেজন্য যারা আমদানি করে তারা যেন পর্যাপ্ত পণ্য আনতে পারে তার জন্য সাপোর্ট দিতে হবে। বাজারে যদি পণ্য না-ই থাকে তাহলে দাম বেধে দিয়ে কী লাভ হবে?

উল্লেখ্য, প্রতি বছর দেশে চিনির চাহিদা থাকে ২২ লাখ টন। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পরিসংখ্যান মতে, বছরের ব্যবধানে দেশে চিনির দাম বেড়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply