চুয়াডাঙ্গা-মুন্সিগঞ্জে অধিকাংশ প্রার্থীই জামানাত হারিয়েছেন, এমন ব্যর্থতার কারণ কী?

|

চুয়াডাঙ্গা ও মুন্সিগঞ্জে নির্বাচনে অংশ নেয়া অধিকাংশ প্রার্থীই জামানাত হারিয়েছেন। ১ ভাগ ভোট না পেয়েই এই ভরাডুবির মুখোমুখি হয়েছেন তারা। তাদের এই ব্যর্থতার পেছনে দলগুলোর সাংগঠনিক দুর্বলতা, প্রার্থী বাছাই আর জন বিচ্ছিন্নতাকেই দুষছেন রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিরা।

চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনে প্রার্থী ছিলেন ১৫ জন। দুই আসনেই বিজয়ী হয় নৌকার প্রার্থী। আর মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্ররা। কিন্তু শোচনীয় অবস্থা বাকি দলগুলোর। নির্বাচনে ১ ভাগও ভোট না পেয়ে ভরাডুবি হয়েছে ৯ প্রার্থীর, জামানাত হারাচ্ছেন তারা।

ভোটের মাঠের এমন ব্যর্থতার কারণ হিসেবে, প্রার্থী বাছাই আর সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই দায়ী করছেন রাজনীতি সচেতন মানুষ।

চুয়াডাঙ্গার সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক মাহাবুল ইসলাম সেলিম বলেন, এই নির্বাচন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, নির্বাচনী লড়াই হয়েছে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের। সেখানে জাকের পার্টি, জাতীয় পার্টি কিংবা এমপিপি যারা ছিল, তাদের জামানতটাও বাতিল হয়ে গেছে।

তবে ভিন্ন কথা বলছেন চুয়াডাঙ্গার আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক তালিম হোসেন। তিনি বলেন, রাজনীতি করতে গেলে মানুষের সাথে মিশতে হবে, মানুষের পাশে থাকতে হবে। আমার মনে হয়, যাদের জামানত বাতিল হয়েছে, তারা মানুষের কাছে যায়নি, পাশে যায়নি।

জামানত ফেরতের কার্যক্রমের বিষয়ে জেলার রিটার্নিং অফিসার ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, গ্যাজেট প্রকাশের একমাসের মধ্যে জামানত ফেরতের কার্যক্রমগুলো শুরু হবে। প্রার্থীরা যদি চান, তাহলে জামানত ফেরতের দাবি করতে পারেন।

প্রার্থীদের ছড়াছড়ি ছিল মুন্সিগঞ্জের ৩টি আসনেও। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্রসহ মোট ২৮ জন ভোটের মাঠে লড়াই করেছেন। তাদের ৮ ভাগের ১ ভাগও ভোট পায়নি ২৩ প্রার্থী। সে তালিকায় রয়েছেন বিকল্প ধারার মাহী বি চৌধুরী এবং তৃণমূল বিএনপির অন্তরা হুদা।

স্থানীয়রা বলছেন, যারা ভোটে দাঁড়িয়েছেন তাদের ২-১ জনকে বাদ দিয়ে বাকি কারোর চেহারাই দেখা যায়নি। প্রচারণাতেও ছিলেন না তারা। বাকি প্রার্থীরা নিজেরা জনপ্রিয় হওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছেন। তবে এতে রাষ্ট্রের টাকা খরচ হওয়া ছাড়া আর কিছুই লাভ হয় না বলেও ক্ষোভ তাদের।

ব্যর্থতার জন্য জনবিচ্ছিন্নতা ও আত্মপ্রচারকেই দায়ী করছে সুশীল সমাজ। জনমত যাচাই করেই নির্বাচনে অংশ নেয়া উচিত বলেও মত তাদের।

এ নিয়ে মুন্সিগঞ্জের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সুজন হায়দার জনি বলেন, স্বতন্ত্র বা অন্যান্য দলের যেসব প্রার্থীরা এবার নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন, তাদের অধিকাংশেরই জনগণের সাথে কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

একই মত জানালেন সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন পাগল। নির্বাচন আসলেই অনেকেই মৌসুমী ক্যানডিডেট হিসেবে সামনে নির্বাচনে দাঁড়ান।

মুন্সিগঞ্জে মোট ভোটার ছিলেন ১৩ লাখ ৪১ হাজার ৭৪৭ জন। আর ভোট প্রদান করেছেন ৫ লাখ ৮ হাজার ৮৯৬ জন।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply